Tuesday, January 19, 2021
গত ১৫ জানুয়ারী ২০২১ খ্রীষ্টাব্দে, ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীতে শ্রদ্ধেয় ডিকন খোকন খ্রীষ্টফার বাড়ো, সিএসসি-এর যাজকীয় অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
পবিত্র খ্রীষ্টযাগ উৎসর্গ করেন রাজশাহী ধর্মপদেশের পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ জের্ভাস রোজারিও, ডি. ডি.। খ্রীষ্টযাগের প্রারম্ভে শ্রদ্ধেয় ডিকনের জীবন বৃত্তান্ত পাঠ করা হয়। এরপর শোভাযাত্রা সহযোগে গির্জায় প্রবেশের মধ্য দিয়ে খ্রীষ্টযাগ শুরু হয়।
পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ উপদেশ সহভাগিতায় বলেন, ‘আজ আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে ঈশ্বর ডিকন খোকন খ্রীষ্টফার বাড়ো সিএসসিকে মণ্ডলীতে সেবাকাজের জন্য আহ্বন করেছেন। ঈশ্বরের আহ্বানে সাড়া দিয়ে যাজক হয়ে এই নতুন যাজক যেন সম্পূর্ণভাবে নিজেকে নিবেদন করে প্রভুর দ্রাক্ষাক্ষেত্রে কাজ করতে পারেন। যীশুর মতো যেন সেই গরীব দুঃখী অসহায় মানুষের সেবা করতে পারেন। আজকের এই দিনে আমরা এই যাজকের জন্য আপনারা প্রার্থনা করবেন।’
শ্রদ্ধেয় ফাদার জেমস (প্রভিন্সিয়াল) বলেন, ‘নব অভিষিক্ত যাজক খোকন বাড়ো ঈশ্বরের আহ্বান বুঝতে পেরে আজ অভিষিক্ত হয়েছেন। তিনি অনেক সাধনা, প্রার্থনা, গঠন ও প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে আজকে যাজক হয়েছেন, এটা সত্যিই ঈশ্বরের একটি বিশেষ আশির্বাদ ও অনুগ্রহ। ‘নব অভিষিক্ত যাজক খোকন বাড়ো ভূতাহারা ধর্মপল্লীর লক্ষীডাঙ্গাঁ গ্রামের সন্তান এবং প্রথম যাজক। আমরা তার জন্য বিশেষভাবে প্রার্থনা করি তিনি যেন বিশস্তভাবে ঈশ্বরের দ্রাক্ষাক্ষেত্রে কাজ করতে পারেন।’
যাজকীয় অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী খ্রীষ্টভক্তদের মধ্য থেকে মিসেস তেরেজা বলেন,‘ শ্রদ্বেয় ফাদার খোকন খ্রীষ্টফার বাড়ো আমাদের ধর্মপল্লীর জন্য আশির্বাদস্বরূপ। আমরা প্রার্থনা করি তিনি যেন খ্রীষ্টভক্তদের আধ্যাত্মিক যত্নে অনেক বেশি উদারহন এবং একজন আধ্যাত্মিক গুরু হিসেবে আদর্শ দেখাতে পারেন।’
বিসিএসএম এর সদস্য মি: জয় হালদার অনুভূতি প্রকাশে বলেন, শ্রদ্ধেয় ফাদার খোকন খ্রীষ্টফার বাড়ো, সিএসসি এর যাজকীয় অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি অনেক আনন্দিত। একজন যুবক পরিারের খ্রীষ্টমণ্ডলীতে যুক্ত থাকে। আজকে যিনি অভিষিক্ত হয়েছেন তিনি মণ্ডলীর সেবা কাজে নিয়োজিত ও উৎসর্গকৃত। আমরা আমি বিশ^াস করি এই অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে অনেক যুবকই ধর্মীয় জীবনে প্রবেশের জন্য উৎসাহ ও প্রেরণা লাভ করবে।’
নব অভিষক্ত যাজক তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘জীবনের এই মাহেন্দ্রক্ষণে এসে আমার হৃদয় মন কৃতজ্ঞতায় ও আনন্দে ভরপুর। আমি উপলব্ধি করছি ঈশ্বরের ভালবাসা, উপলব্ধি করছি আমার জন্য তাঁর পরিকল্পনা। কত বিচিত্রভাবেই না ঈশ্বর আমাকে তাঁর কাজের জন্য ধরে রেখেছেন। আমি দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও তাঁর ভালবাসা ও করুণার স্পর্শ আমাকে বার বার সঞ্জিবীত করে তুলেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রভু তাঁর ভালবাসা দিয়ে আমাকে এমনভাবে সিক্ত করবেন তা ভেবেই আমি শিহরীত ও মোহিত। জীবন উৎসর্গ করার পূণ্য প্রেরণা ও চেতনা তিনিই তো আমাকে যুগিয়ে দিয়েছেন। আর আজ সেই চেতনায় আমি উদ্ভাসিত, উদ্বেলিত। তাঁর চরণ তলে শত সহস্র প্রণাম নিবেদনই আমি যেন তৃপ্ত তাঁকে আপন করে পাওয়াতেই যেন আমার পরিপূর্ণতা। সত্যিই আজ আমি কৃতজ্ঞ ও আনন্দিত।’
খোকন খ্রিস্টফার বাড়ো, সিএসসি ২ নভেম্বর, ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে, বর্তমান, শ্রমিক সাধু যোসেফ (ভূতাহারা) ধর্মপল্লীর অর্ন্তগত, লক্ষীডাঁঙ্গা গ্রামে, আদিবাসী অ-খ্রিস্টান উড়াও পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মৃত: বিহারী বাড়ো এবং মাতা মৃতঃ রুনিয়া এক্কা । পরিবারে তারা পাঁচ ভাই ও তিন বোন।
পবিত্র খ্রষ্টিযাগের পর নব অভিষিক্ত ফাদার খোকন খ্রীষ্টফার বাড়ো সিএসসি কে শুচ্ছো ও অভিনন্দন জানানো হয়। এই যাজকীয় অভিষেক অনুষ্টানে ৩২ জন ফাদার, ৪০ জন সিস্টার এবং প্রায় ৮০০ জন খ্রীষ্টভক্ত অংশগ্রহণ করেন।- ফাদার সুরেশ পিউরীফিকেশেন
Add new comment