Radio Veritas Asia Buick St., Fairview Park, Queszon City, Metro Manila. 1106 Philippines | + 632 9390011-15 | +6329390011-15
ভক্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হলো রক্ষাকারিণী মা মারীয়ার তীর্থ উৎসব
গত ১৬ জানুয়ারী ২০২১ খ্রিস্টাব্দে, নবাইবটতলা ধর্মপল্লীতে মহাসমারোহে রক্ষাকারিনী মা মারীয়ার তীর্থ উৎসব উদযাপন করা হল।
এই মহা তীর্থ উৎসবের আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি স্বরূপ ৯ দিন ব্যাপী নভেনা ও খ্রীষ্টযাগ করা হয়। তীর্থ উৎসবের দিনে সকাল থেকেই অনেক ভক্তবিশ্বাসীগণ দলে দলে তীর্থ স্থানে আসতে শুরু করেন।
প্রথমেই সকাল ৮:৩০ মিনিটে খ্রীষ্টভক্তদের নিয়ে শোভাযাত্রা করে ক্রুশের পথ করার পর ১০:১৫ মিনিটে পর্বীয় খ্রীষ্টযাগ শুরু হয়। পবিত্র খ্রীষ্টযাগ উৎসর্গ করেন পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ জের্ভাস রোজারিও।
বিশপ মহোদয় তার উপদেশ সহভাগিতায় বলেন, “আমরা জানি ১৯৭১ সালে আশ্চর্যজনকভাবে রক্ষাকারিণী কুমারী মারিয়ার মধ্যস্থতায় পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে এই নবাইবটতলার ভক্তবিশ্বাসীগণ রক্ষা পেয়েছিলেন। নবাইবটতলার এই তীর্থ আমাদের প্রতেক্যের জন্য আশির্বাদের কারণ মা মারিয়া আমাদের সব সময় সাহায্য করেন বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করেন।”
তিনি আরো বলেন, “বর্তমান বিশ্বে মহামারী করোনা ভাইরাস এর হাত থেকেও মা মারিয়া আমাদের রক্ষা করে যাচ্ছেন। তাই সবার প্রতি আহ্বান মায়ের প্রতি যেন আমরা আরও বেশি বিশ্বাসী হই এবং রোজারি মালা প্রার্থনা করি, যেন ঈশ্বরের কৃপা ও আশির্বাদ আমরা মায়ের মধ্যস্থতায় লাভ করতে পারি।”
নবাই বটতলা মিশনের কাটেখিস্ট মাস্টার কার্লুস মারান্ডী বলেন, “আজকের দিনে আমি রক্ষাকারিণী কুমারী মারিয়াকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই কারণ তিনিই ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে আমাদের সবাইকে রক্ষা করেছেন। তিনি আজও আমাদের এই ধর্মপল্লীর সকলকে রক্ষা করে যাচ্ছেন।”
রক্ষাকারিণী কুমারী মারিয়ার তীর্থ উৎসব যোগদানকারী মিসেস সুলেখা গমেজ একান্ত অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, “আমি রক্ষাকারিণী কুমারী মারিয়ার মায়ের কাছে মানত নিয়ে এই তীর্থ উৎসব অংশগ্রহণ করতে এসেছি। আমার ধারণা ছিল, এ বছর করোনার কারণে খুব বেশি খ্রীষ্টভক্ত হয়ত আসবে না কিন্তু এখানে এসে যখন দেখলাম হাজার হাজার মায়ের ভক্তবিশ্বাসীগণ এসেছেন তখন আমার মায়ের প্রতি বিশ্বাস যেন আরও আরও গভীর হয়ে গেল। আমি আজ মায়ের প্রতি অনেক অনেক বেশি কৃতজ্ঞতা।”
নবাই বটতলায় ৮ই নভেম্বর, ১৭৭১ খ্রীষ্টাব্দে ঘটে এক অবিস্মরণীয় আশ্চর্য ঘটনা, যা স্থানীয় খ্রীষ্টভক্তগণের দৃষ্টিতে অলৌকিক বা দৈব। এই দিনটিতে পাক হানাদার বাহিনী নবাইবটলা গ্রাম ঘিরে ফেলেছিল। গ্রামের মানুষ পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গির্জায় প্রার্থনা করার জন্য সমবেত হয়।
প্রথমে খ্রীষ্টভক্তগণ রোজারিমালা আবৃত্তি করতে শুরু করেন কিন্তু যখন শুনেছেন পাক বাহিনী গ্রামে ঢুকে পড়েছে তখন তারা আরও বেশি ভয় পেয়ে গেলেন আর মা মারিয়ার মূর্তির কাছে গিয়ে প্রাথর্না করতে লাগলেন। কেউ কেউ হাঁটু গেড়ে, অশ্রুজল ফেলে করজোরে প্রার্থনা করতে লাগলেন।
রক্ষাকারিনী মা সেদিন তাদের প্রার্থনা শুনেছেন। আর আশ্চর্যজনকভাবে তারা সেদিন রক্ষাকারিণী কুমারী মারিয়ার মধ্যস্থতায় পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পান। তখন থেকে প্রতি বছর এই দিনটি স্মরণ করে রক্ষাকারিণী কুমারীর প্রতি ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা নিবেদন করা হয়।
পরবর্তীতে চিন্তাভাবনা করা হয়, যেহেতু নভেম্বর মাস ধান কাটার সময় তাই গ্রামের প্রধানগণই পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, ধান কাটা ও ঘরে তোলা শেষে রক্ষাকারিণী কুমারীর স্মরণে কৃতজ্ঞতা স্বরূপ ১৬ জানুয়ারী পর্ব উৎসব পালিত হবে। পরবর্তীতে তা আরও বড় পরিসরে তীর্থ উৎসব পালন করে আসছেন।- ফাদার সুরেশ পিউরীফিকেশন
Add new comment