Radio Veritas Asia Buick St., Fairview Park, Queszon City, Metro Manila. 1106 Philippines | + 632 9390011-15 | +6329390011-15
পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইন বাতিলে বাংলাদেশে খ্রিষ্টানদের মানববন্ধন
২৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিওর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মানবন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশে হিন্দু-বৌদ্ধসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগণ অংশগ্রহণ করেন ও সংহতি প্রকাশ করেন।
বেলা ১১টায় ঢাকা গুলশান-২ গোল চত্বরে এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিওর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-মহাসচিব জেমস্ সুব্রত হাজরার সঞ্চালনায় এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও পাকিস্তানে খ্রিষ্টানসহ সংখ্যালঘু অন্যান্য সম্প্রদায়ের উপর চলমান নির্যাতনের কঠোর সমালোচনা ও নিন্দা জানান।
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইনের মাধ্যমে খ্রিষ্টানসহ সংখ্যালঘুদের উপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। কোনো ধর্মই সামান্য কারণে মানুষ হত্যা করতে উৎসাহিত করে না। কিন্তু পাকিস্তানে খ্রিষ্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে এই আইনের মাধ্যমে নির্যাতন-নিপীড়ন করা হচ্ছে।’
রোজারিও বলেন, ‘পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইনের মাধ্যমে বহু খ্রিষ্টান ও সংখ্যালঘু ইতিমধ্যে হত্যা ও নিপীড়নের শিকার হয়েছে। ২০১০ সালে আসিয়া বিবি নামে এক খ্রিষ্টান নারীর নামে এই আইনের মাধ্যমে মিথ্যে মামলা দেওয়া হয়। তখন আমরাও আন্দোলন করেছিলাম, পাকিস্তান হাইকমিশনের মাধ্যমে তখনকার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত চিঠিও দিয়েছি। বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনের পর দীর্ঘ আট বছর কারাগারে রেখে অবশেষে উচ্চআদালত আসিয়া বিবিকে মুক্তি দেয়। এ ছাড়াও বিভিন্নভাবে পাকিস্তানে খ্রিষ্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন ও নিপীড়ন চালানো হচ্ছে যুগযুগ ধরে। পাকিস্তান সরকারকে অনতিবিলম্বে এসব বন্ধ করার কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
সমাবেশে বাংলাদেশ সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি প্রাক্তন রাষ্টদূত অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের উপর চলমান নির্যাতনের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবেই পাকিস্তান নানান অপরাধ সংগঠিত করে আসছে। বাংলাদেশের উপর ওদের নির্যাতনের চিত্র গোটা বিশ্ব জানে। ওরা সেচ্ছাচারী হয়ে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করে আসছে। পাকিস্তানিদের মধ্যে কোনো ন্যায়-নীতিবোধ নেই। পাকিস্তান সারা বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে দিচ্ছে। যত বড় বড় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বা সন্ত্রাসী রয়েছে, পাকিস্তানে তাদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।’
‘ব্লাসফেমি আইন প্রচলন করে সংখ্যালঘু নির্যাতনই যেন ওদের উদ্দেশ্য। যেদিন ওরা মূল্যবোধসম্পন্ন হবে, সেদিন শান্তি ফিরে আসবে,’ বলেন নিমচন্দ্র ভৌমিক।
এ ছাড়াও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জী, বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভদন্ত সুনন্দপ্রিয় ভিক্ষু, বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক-বিষয়ক সম্পাদক থিওফিল রোজারিও, মহিলা-বিষয়ক সম্পাদক কল্পনা ফলিয়াসহ দেশের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা এ সময় পাকিস্তানে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ ও যাদের ব্লাসফেমি আইনের মাধ্যমে শাস্তির রায় দেওয়া হয়েছে, তাদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং অনতিবিলম্বে ব্লাসফেমি আইন বাতিলের জোর দাবি জানান।
স্মারকলিপিতে পাকিস্তানের খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর তথাকতিথ ব্লাসফেমি আইনের অপব্যবহার ও তার আবরণে হয়রানি, নির্যাতন-নিষ্পেষণ এবং মৃত্যুদন্ড বন্ধসহ মানবাধিকার পরিপন্থী ব্লাসফেমি আইন অনতিবিলম্বে বাতিলের জোর দাবি জানানো হয়। যাদের ব্লাসফেমি আইনে মৃত্যুদন্ড প্রদানের রায় দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে মার্জনাপূর্বক জীবন রক্ষার দাবিও জানানো হয়। - (ডিসিনিউজ)
Add new comment