Radio Veritas Asia Buick St., Fairview Park, Queszon City, Metro Manila. 1106 Philippines | + 632 9390011-15 | +6329390011-15
রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হলো ১৮তম পালকীয় কর্মশালা
“আমরা হলাম দায়িত্বপ্রাপ্ত সেবক” এ মূলসুরকে কেন্দ্র করে বিগত ১১-১২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ খ্রিস্টাব্দ রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের খ্রিস্টজ্যোতি ও পালকীয় সেবাকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলো পালকীয় কর্মশালা ২০২০ খ্রিস্টাব্দ।
রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের পালকীয় পরিষদের আহবায়ক, ফাদার উইলিয়াম মুর্মু, উপস্থিত সকলকে স্বাগতম শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে এ প্রথমবার সীমিত লোকজনের অংশগ্রহণে পালকীয় কর্মশালা আয়োজন করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে আমরা ভিকারিয়াভিত্তিক কর্মশালা করেছি। ঐ কর্মশালার প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে এ কর্মশালার অংশগ্রহণকারীদের মতামত নিয়ে একসাথে আমরা দায়িত্বশীল সেবক হওয়া জন্য কাজ করব।
বিশপ জের্ভাস রোজারিও তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, “ঈশ্বর আমাদের ভালবেসে সৃষ্টি করে অভাব পূরণের জন্য দিয়েছেন এ পৃথিবীর সকল সৃষ্টি। তাই সৃষ্টির সব কিছুকে যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্ব তিনি আমাদেরই দিয়েছেন। কিন্তু আমরা সৃষ্টির যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ না করে করছি তা ভক্ষণ ও ধ্বংস। পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা ও সৌন্দর্য্য ফিরিয়ে আনতে প্রত্যেক খ্রিস্টভক্তের নামে একটি করে গাছ লাগানো হবে আমাদের অঙ্গীকার।”
তিনি বলেন, এইভাবে আমরা সৃষ্টির যত্ন করব, আর পৃথিবীকে পরিচ্ছন্ন ও সবুজ সুন্দর করে তুলব। এছাড়া আমাদের পিতা-মাতা, ভাইবোন, সন্তান, প্রবীন, আমাদের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন আপনজনসহ আশেপাশে দরিদ্র অসহায় সকলের দায়িত্বই আমাদের রয়েছে -এই দায়িত্ব ঈশ্বরই আমাদের দিয়েছেন।
“ঈশ্বর আমাদের দিয়েছেন আমাদের পরিত্রাণের চিহ্ন খ্রিস্টমণ্ডলীও। আর খ্রিস্টমণ্ডলীর আশা হলো আমরাও যেন তাকে ভালবাসি ও যত্ন করি। খ্রিস্টমণ্ডলীর পালকীয় সেবাকাজ শুধু ফাদার, ব্রাদার ও সিস্টারদের নয়; সেই দায়িত্ব আমাদের সকলের অর্থাৎ আমরা সকলেই দায়িত্বপ্রাপ্ত। মণ্ডলীর জন্য আমরা কেউ দিতে পারি আমাদের “সময়” বা সেবাকাজ, কেউ দিতে পারি “প্রতিভা” অর্থাৎ দক্ষতা বা বুদ্ধিমত্তা ও পরামর্শ এবং কেউ দিতে পারি “অর্থ সম্পদ” বা টাকা পয়সা যার দ্বারা মণ্ডলী তার ব্যয় নির্বাহ করতে পারে,” বলেন বিশপ জের্ভাস।
ফাদার ইম্মানুয়েল কানন রোজারিও, পরিচালক, উন্নয়ন ও প্রশাসন, রাজশাহী ধর্মপ্রদেশ এবং ফাদার বাবলু কোড়াইয়া, পরিচালক, খ্রিস্টজ্যোতি ও পালকীয় সেবাকেন্দ্র কর্মশালায় তাঁদের মূল্যবান বক্তব্য প্রদান করেন। এছাড়াও কর্মশালায় ভিকারিয়াভিত্তিক দলীয় আলোচনা, পর্যালোচনা ও পরবর্তী বছরের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
উপস্থিত অংশগ্রহণকারীগণ কর্মশালায় অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, কাজের সফল বাস্তবায়নে প্রয়োজন একে অপরের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করা, স্থানীয় সরকার পর্যায়ের যে সুযোগ সুবিধা রয়েছে তা প্রাপ্তিতে যোগাযোগ করা, প্রাক-প্রস্তৃতি, সমস্যা ও সমাধান জানা, কর্মশালা শেষে কাজ করতে যেন ভুলে না যাই, স্থানীয়ভাবে কাজ করার সুযোগ তৈরী করা, পরিকল্পনা ফলোআপ করা, জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়ানো, মনিটরিং কমিটি গঠন করা, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা, কর্মশালার আলোচনা গ্রাম ও পরিবার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, পালকীয় কমপরিকল্পনা করে দর্শনীয় স্থানে রাখা যেন সকলে দেখেন, ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সুন্দর পরিকল্পনা করা এবং পারিবারিক প্রার্থনা জোরদার করা।
এই পালকীয় কর্মশালার মূল দর্শন হলো মণ্ডলীতে দায়িত্বশীল ও বিশ্বাসযোগ্য সেবক হওয়া। আর প্রেরণ হলো দায়িত্বশীল ও বিশ্বাসযোগ্য সেবক হয়ে ওঠার জন্য খ্রিস্টিয় গঠন এবং ঈশ্বর, বিশ্ব প্রকৃতি ও মানুষের সেবার জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা।
২০২০ খ্রিস্টাব্দে খ্রিস্টজ্যোতি পালকীয় সেবাকেন্দ্রে ধর্মপ্রদেশের বিশপ, ৩৯ জন যাজক, ২৪ জন সিস্টার, ১জন ব্রাদার, ১ জন ডিকন ও ৬০ জন খ্রিস্টভক্তসহ মোট ১২৫ জন অংশগ্রহণকারী নিয়ে ১৮তম ধর্মপ্রদেশীয় পালকীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
এই ১৮তম ধর্মপ্রদেশীয় পালকীয় কর্মশালা দায়িত্বপ্রাপ্ত সেবক হওয়ার চেয়ে দায়িত্বশীল সেবক হিসেবে গড়ে উঠার ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে অনুপ্রাণিত করবে। কর্মশালায় গৃহীত অগ্রাধিকারসমূহ ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, ধর্মপল্লী ও ধর্মপ্রদেশ পর্যায়ে ফলপ্রসুভাবে বাস্তবায়ন করতে আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে অংশগ্রহণ করব। এই কাজে সর্ব শক্তিমান ঈশ্বর আমাদের অনুগ্রহ ও আশির্বাদ দান করুন।
Add new comment