কেমন হল ভারতে এবারের রথ যাত্রা উৎসব

করতাল, শঙ্খধ্বনি, ধর্মীয় আচার— আয়োজনের কোনও ত্রুটি ছিল না। কিন্তু, করোনার ভ্রুকুটিতে গোটা পুরী শহরে কার্ফুর মধ্যেই পালিত হল এবারের প্রভু জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। কোভিড বিধি মেনে উপস্থিত ছিলেন না কোনও ভক্ত। মন্দিরের পূজারি, সেবাইত ও পুলিস কর্মীদের উপস্থিতিতে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা নিয়ম মেনেই রথে চড়ে গেলেন তাঁদের মাসির বাড়ি। ভক্তদের অনুপস্থিতিতে জগন্নাথ মন্দিরের সামনের তিন কিলোমিটার দীর্ঘ গ্রান্ড রোড ছিল কার্যত ফাঁকা। পথের ধারে বা আশপাশের বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে এই বাৎসরিক উৎসব দর্শনের অনুমতিও ছিল না। পুরীর জেলাশাক শ্রী সমর্থ্য ভার্মা জানান, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থেই এই সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছিল। এই নিয়ে পরপর দুই বছর ভক্তশূণ্য রথযাত্রা পালিত হল। রবিবার (১১ জুলাই, ২০২১) রাত থেকেই প্রয়োজনীয় আচার - আচরণ শুরু হয়ে যায়। সোমবার সকালে রত্ন সিংহাসন থেকে প্রভু জগন্নাথদেবের মূর্তি নামিয়ে সিংহদুয়ার দিয়ে মন্দিরের বাইরে আনা হয়। সেখানে সুসজ্জিত ছিল জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার রথ যথাক্রমে নন্দীঘোষ, তালধ্বজ ও দর্পদলন। কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে তিনটি রথ রওনা দেয় গন্তব্যের দিকে। ব্যবস্থা ছিল রথযাত্রা অনুষ্ঠানটির সরাসরি সম্প্রচারের।

এদিকে কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় পাঁজিপুঁথির নিয়ম মেনে হল রথযাত্রা। সোমবার (১২ জুলাই, ২০২১) বলরাম, সুভদ্রাকে নিয়ে জগন্নাথদেব গেলেন মাসির বাড়ি। কিন্তু কোথাও বসল না রথের মেলা। দেখা মেলেনি নাগরদোলা, পাঁপড়ভাজা, জিলিপির সমাহারে বহু মানুষের আনন্দ-উচ্ছ্বাস। অন্যতম জনপ্রিয় ও প্রাচীন রথযাত্রা হয় পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার মাহেশে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে বসতো বিশাল মেলাও। এবার সেখানে এসব পরিচিত চিত্র উধাও। এখানে মূল মন্দিরের পাশে অস্থায়ীভাবে তৈরি করা হয়েছে মাসির বাড়ি। রথযাত্রা উপলক্ষে এবার কোনও দোকানপাটই বসেনি মাহেশে। গত কয়েক বছরে কলকাতায় জনপ্রিয়তা লাভ করেছে ইসকনের রথযাত্রা। সোমবার ক্যামাক স্ট্রিটে ইসকনের কলকাতা শাখার অফিস থেকে তিন বিগ্রহকে বের করে মোটরগাড়িতে চাপিয়ে গুরুসদয় দত্ত রোডে ইসকনের আর এক মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্যান্য বছর কয়েক হাজার ভক্ত যেভাবে নেচে-গেয়ে সারা পথ রথ টেনে নিয়ে যেতেন, সেই আনন্দ-উৎসব এদিন দেখা যায়নি স্বাভাবিকভাবেই। এই রথ উপলক্ষে ময়দানে ক’দিন ধরে চলে রথের মেলা। এবার তাও বসেনি। করোনাকালে রথযাত্রার ‘নিউ নর্মাল’ বোধ হয় এমনটাই! প্রতিবেদন – অতনু দাস।

YouTube: http://youtube.com/veritasbangla

Website: https://bengali.rvasia.org

Comments

‌বেশ চমৎকার প্রতি‌বেদন। পুরীর রথ নি‌য়ে সবার মন প‌ড়ে থা‌কে। প‌ড়ে কিছুটা হ‌লেও আনন্দ পা‌বেন সক‌লে। ধন‌্যবাদ অতনু দাস দাদা‌কে

Add new comment

10 + 8 =