Radio Veritas Asia Buick St., Fairview Park, Queszon City, Metro Manila. 1106 Philippines | + 632 9390011-15 | +6329390011-15
আজ ১২ মে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস
আজ ১২ মে বিশ্ব নার্স দিবস । মানব সেবায় অনন্য দায়িত্ব পালনকারী নার্সদের স্বীকৃতি ও সম্মান প্রদর্শনের দিন হলো "আন্তজাতিক নার্সেস দিবস"।
এই দিবসটি উদযাপনের প্রধান লক্ষ্য হল, নার্সিং পেশা সম্পর্কে কিছু সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া । আর স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে নার্সদের গুরুত্ব তুলে ধরে।
১৯৬৫ সাল থেকে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশেও এই দিবসটি ১৯৭৪ সাল থেকে সরকারী ও বেসরকারি ভাবে পালিত হচ্ছে।
ফ্লোরেন্স নাইটিংগেলের সেবাকর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার জন্মদিন ১২ মে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস পালন করা হয়। নাইটিংগেল ছিলেন অপূর্ব রূপসী, অন্যদিকে খুবই দয়ালু ও স্নেহপূর্ণ মনের অধিকারী। তাকে ইউরোপের অন্ধকারে আলোকবর্তিকা বলে আখ্যায়িত করা হয়।
জন্ম ১৮২০ সালের ১২ মে ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে। নাইটিংগেল মানবসেবার প্রতি প্রথম টান অনুভব করেন ১৭ বছর বয়সে লন্ডনে থাকা অবস্থায়। পরবর্তীতে এই টানকে তিনি ‘ঈশ্বরের ডাক’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
কিন্তু সেবাকে জীবনের ব্রত হিসাবে নেওয়ার কথায় প্রবল আপত্তি আসে তার পরিবার থেকে। তখন সমাজে নার্সিং ছিল নিম্নবিত্ত, অসহায়, বিধবা মহিলাদের পেশা। পরিবারের প্রবল আপত্তিকে পাশ কাটিয়ে তিনি নিজেকে নার্সিংয়ের কৌশল ও জ্ঞানে দক্ষ করে তোলেন।
তবে ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, ১৮৫৩ সালের অক্টোবর থেকে ১৮৫৬ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলা ক্রিমিয়ার যুদ্ধের সময় তিনি অন্যতম ভূমিকা পালন করেছিলেন, বলা হয়ে থাকে যে, এই যুদ্ধে তিনি অসুস্থ সৈন্যদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এই যুদ্ধটি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্রিটেন, তুরস্ক, ফ্রান্স এবং সার্ডিনিয়া এর জোটের মধ্যে হয়েছিল।
এই যুদ্ধের সময় বেশ কয়েকজন সেনা আহত হয়। ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল কেবল তাদের যত্নই নেননি, স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রেও এক বিশাল পরিবর্তন এনেছিলেন।
এই দিবসটির ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, ১৯৭৪ সালে ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল ফর নার্সেস ঘোষণা করে। ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল ক্রিমিয়ার যুদ্ধের সময় অন্যতম ব্যক্তিত্ব হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। এই যুদ্ধেই নার্সিং ইতিহাসে বৈপ্লবিক উন্নয়ন ও পরিবর্তন ঘটেছিল।
অপর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা ও সৈন্যদের খারাপ অবস্থা দেখে, ৩৮ জন সেবিকাসহ সৈন্যদের সেবা করার জন্য এগিয়ে আসেন ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল। যুদ্ধের সময় তাঁকে ইস্তাম্বুলের স্কুটারিতে ব্যারাক হাসপাতালে পোস্টিং করা হয়েছিল।
আহত সৈন্যদের যত্ন নেওয়ার জন্য একদল নার্সের নেতৃত্ব দেওয়ার দায়াত্বি তাঁকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, নাইটিঙ্গেল হাসপাতালে আসার পরে সেখানকার অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর ও করুণ অবস্থা দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন।
তাই, শীঘ্রই তিনি হাসপাতাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং সঠিক স্বাস্থ্যবিধির ব্যবস্থা করেন, পাশাপাশি তিনি পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার এবং চিকিৎসা প্রয়োজনীয় সামগ্রীরও ব্যবস্থা করেন। এইভাবে তিনি স্বাস্থ্যসেবার জন্য যথাযথ হাসপাতাল গড়ে তোলেন। এটি আজও নার্সিং সেবার জন্য এক অনন্য উদাহরণ হয়ে আছে।
পরে তিনি স্বাস্থ্য ও নার্সিং কেয়ারে সংস্কারসাধনের জন্য একটি অভিযান সংগঠিত করেন। তবে ১৯৬০ সালে তিনি লন্ডনে নাইটিঙ্গেল স্কুল অফ নার্সিং চালু করেন। এই ভাবেই বিশ্বজুরে নার্স দিবসের প্রচলন হয়ে আসছে।
"নার্স মানেই মনে সাদা, পোষাকে সাদা আচরন ও কর্মে সাদা"। সবকিছুতেই যেন সাদার সমাহার। শান্তির প্রতীক এই সাদাকে তাঁরা মনে, মননে ধারন করে জীবন/যৌবনকে উৎসর্গ করেন সাদার ভুবনে।
মূলত: সেবাই তাঁদের মূল ধর্ম, সেবাই তাঁদের ব্রত। আজ এই নার্স দিবসে সকল নার্সদের প্রতি রইল অনেক শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও শুভ কামনা।- নিখিল গমেজ
Add new comment