Radio Veritas Asia Buick St., Fairview Park, Queszon City, Metro Manila. 1106 Philippines | + 632 9390011-15 | +6329390011-15
মিয়ানমারের ক্যাথলিক সিস্টার রোজ লাসাং নু টাও সশস্ত্র পুলিশ সদস্যদের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেন
গত ২৮ শে ফেব্রুয়ারি ২০২১ খ্রিস্টাব্দে, মিয়ানমারের মিচিনা ডায়োসিসের ক্যাথলিক সিস্টার রোজ লাসাং নু টাও সশস্ত্র পুলিশ সদস্যদের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেন।
এসময় সিস্টার রোজ বিক্ষোভকারীদের বদলে তাকে গুলি করার আহ্বান জানান। তার এই প্রার্থনার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
সেন্ট ফ্রান্সিস জাভিয়ারের সম্প্রদায়ের সিস্টার তিনি, একদিকে পুলিশ ও সৈন্যদের দল এবং অন্যদিকে প্রতিবাদকারীদের মাঝে তিনি দাঁড়িয়ে গুলি না চালাতে হাটু গেড়ে হাত জোর করে অনুরোধ করেন। ।
যখন পুলিশ এবং সৈন্যরা লোকদের দিকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করবে ঠিক তখন সিস্টার রোজ হঠাৎ বেরিয়ে এসে জনতার মাঝে দাঁড়াল এবং তিনি চিৎকার করে পুলিশকর্মী ও সৈন্যদের বন্দুক নামাতে এবং সহিংসতা এড়াতে অনুরোধ করেন।
এক সাক্ষাৎকারে সিস্টার অ্যান রোজা বলেন, বিক্ষোভকারীদের আঘাত না করতে আমি তাদের কাছে অনুরোধ করি। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের মতো আচরণ করার আহ্বান জানাই। তিনি আরও বলেন, আমি তাদের বলেছি তোমরা আমাকে হত্যা করতে পারো। বিক্ষোভকারীদের নিপীড়ন না করার প্রতিশ্রুতি পাওয়ার আগ পর্যন্ত আমি উঠব না।
স্কাই নিউজকে পৃথক সাক্ষাৎকারে সিস্টার জানান, পুলিশও হাঁটু গেড়ে বসেছিল। তারা আমাকে বলেছে বিক্ষোভ দমানোর জন্য তাদের বিক্ষোভকারীদের আঘাত করতেই হবে। তিনি জানান, তার মনে হয়েছে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের গুলি না করার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু পরে তারা গুলি করেছে।
সিস্টার বলেন, যখন তারা গুলি ও বিক্ষোভকারীদের মারধর শুরু করে তখন আমি খুব মর্মাহত হই। আমার মনে হয়েছিল আজ আমার মৃত্যু হবে। আমি মরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। টিয়ার গ্যাস ছোড়া হলে আমার নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। আমরা বন্দুকের গুলির শব্দ শুনতে পাই। দেখতে পাই এক কিশোরের মাথা বিস্ফোরিত হয়েছে। রাস্তা পরিণত হয় রক্তের নদীতে। সাহসী এই সিস্টার আরও বলেন, মাথায় প্রথম গুলিবিদ্ধ ব্যক্তি তখনও নিশ্বাস নিচ্ছিলেন। আমরা যখন ক্লিনিকে পৌঁছাই মানুষ তাকে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যু হয়।
এই সিস্টার ও অপর প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ওই দিন সেখানে অন্তত দুই বিক্ষোভকারী নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিলেন।
পরের দিন সিস্টার রোজ আহতদের তাদের নিজেদের ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে সেবা করেছেন। গত তিন বছর ধরে সিস্টারগন এই ক্লিনিক পরিচালনা করছেন। এর আগে সিস্টার বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মাঝখানে উপস্থিত হয়ে শান্তি প্রার্থনা করেছিলেন।
একটি বেসরকারি সংস্থার মতে, ১ ফেব্রুয়ারির বিক্ষোভের পর হতে মিয়ানমারের অন্তত ৫৬ জন নিহত ও ১ হাজার ৭৯০ জনকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়েছে।- তথ্য : সংগৃহিত
Add new comment