Radio Veritas Asia Buick St., Fairview Park, Queszon City, Metro Manila. 1106 Philippines | + 632 9390011-15 | +6329390011-15
১৯ বছরে পরও চোখের জল ফেলে যাচ্ছেন সন্তান হত্যার বিচারের আশায়
আজ ৩ জুন বানিয়ারচর ক্যাথলিক গির্জায় বোমা হামলা ট্র্যাজেডি দিবস আজ । ২০০১ সালের এই দিনে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ১০ জন খ্রিস্টভক্ত খ্রিস্টযাগ চলাকালনি প্রাণ হারায় ভয়াবহ বোমা হামলায় এবং আহত হয় অর্ধশত মানুষ। নিহত ১০জনের মধ্যে ৭জনই হলো মা বাবার একমাত্র সন্তান।
৩ জুন ২০০১ খ্রিস্টাব্দে বানিয়ারচর গির্জার পাল পুরোহিত ফাদার মিম্মো প্রায় পাঁচশত জন খ্রিস্টভক্তের উপস্থিতিতে রবিবাসরীয় পবিত্র খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করছিলেন সকাল সারে সাতটায়। সেদিন ছিল পবিত্র আত্মার অবতরণের পর্ব। পবিত্র বাইবেল থেকে দ্বিতীয় শাস্ত্র পাঠের পূর্বেই ঘটে যায় ভয়াবহ টাইম বোমার বিস্ফোরণ।
১৯ বছর হলেও আজও সম্পন্ন হয়নি সেই বিচারকাজ । নিহত ব্যক্তিদের পরিবার ও স্বজনেরা আজও পায়নি কোন সুবিচার । নিহতদের বাবা-মা ও তাদের স্বজনরা এখনো চোখের জল ফেলে যাচ্ছেন সন্তান হত্যার বিচারের আশায়।
প্রতিবছরের মতো এবছরও বানিয়ারচর ক্যাথলিক গির্জায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে পালন করা হচ্ছে দিনটি নানা কর্মসূচি মধ্যদিয়ে। করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে কিছুটা সীমিত আকারে তা পালন হচ্ছে। সকাল সাতটায় খ্রিস্টযাগ উৎসগ, সমাধিতে মঙ্গলজল ও ফুল দেওয়ার মাধ্যমে স্মরণ করা হয় নিহতদের। সন্ধ্যায় রয়েছে নিহতেদর কবরে মোমবাতি প্রজ্বালন।
নিহত সঞ্জীবন বাড়ৈর বাবা বিজেন্দ্র বাড়ৈ প্রথম আলোর সংবাদ মাধ্যমকে বলেন : ‘আমরা এখন ক্লান্ত। সেই ২০০১ সাল থেকে বিচার চেয়ে আসছি। কিন্তু কেউ আমাদের দাবি শোনে না। এই বৃদ্ধ বয়সে কষ্ট করে চলতে হচ্ছে। টাকা নাই, পয়সা নাই, খাইয়া না-খাইয়া বাঁইচা আছি।’ তিনি বলেন, ‘ছেলে বাঁইচা থাকলে হয়তো এত কষ্ট করতে হতো না। ছোয়ালডা মরল, তার বিচারডাও পাইলাম না। দেশে কত বিচার হচ্ছে। আমাগো বিচারডা কী দোষ করছে? বিচারডা হইলে মইরাও শান্তি পাইতাম।’
একমাত্র সন্তানকে হারানোর পর নিহত সুমন হালদারের বাবা সুখরঞ্জন হালদার আজ হৃদ্রোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত। তিনি বলেন, : প্রতিদিনই দু-একবার ছেলের ছবি সামনে নিয়ে প্রতিবেশীদের কাছে স্মৃতিচারণা করে চোখের পানি ফেলি। তিনি বলেন আমার ছেলে একদিন যিশুখ্রিষ্টের মতো পুনর্জন্ম নিয়ে আমার কাছে ফিরে আসবে ।
নিহত এমন আরো আটটি পরিবার আজও বুক ভরা আশা নিয়ে বেঁচে আছে। মৃত্যু আগে তাদের সন্তান হত্যার বিচার দেখে যেতে পারবে। তাঁদের একটাই দাবি, দ্রুত এই হত্যাকাণ্ডের বিচার শেষ করে দোষীদের ফাঁসি দেওয়া।
সিআইডির গোপালগঞ্জ ক্যাম্প ইনচার্জ ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক ফতেহ মো. ইফতেখারুল আলম প্রথম আলো সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বানিয়াচরের ঘটনায় দুটি মামলা রয়েছে, বেশ কয়েকজন জঙ্গি সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে। তিনি বলেন আমার আগে ২১ জন তদন্ত কর্মকর্তা বদল হয়েছেন। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর এই মামলার তদন্তকাজ গুরুত্ব দিয়েছি, কিছু আসামি বিদেশে পলাতক থাকায় আইনগত একটু সমস্যা রয়েছে। জঙ্গি সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হলেও এখন পর্যন্ত এ বোমা হামলার মূল পরিকল্পনাকারীকেও শনাক্ত করতে পারেনি সিআইডি।
তাই প্রতিবারের মত এবছরও নিহত পরিবার গুলোরএকটাই দাবী, বোমা হামলার মূল পরিকল্পনাকারীকেও শনাক্ত করতে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নৃশংস হত্যার বিচারকাজ দ্রুত সম্পন্ন করা। - রিপন আব্রাহাম টলেন্টিনু
তথ্য : প্রথম আলো নিউজ
Add new comment