Radio Veritas Asia Buick St., Fairview Park, Queszon City, Metro Manila. 1106 Philippines | + 632 9390011-15 | +6329390011-15
ময়মনসিংহে লকডাউনে কর্মহীন ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সাপ্তাহিক ফ্রি হাট
এলাকার কলেজ পড়ুয়া যুবাদের উদ্যোমে গড়ে উটেছে এক বিরল দৃষ্টান্ত। যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরার হয়েছে।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের আঠারোবাড়ী-নান্দাইল সড়কের পাশে লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য চালু করেছে সাপ্তাহিক ফ্রি হাট 'মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশন' নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
সারি সারি সাজানো আছে কাঁচাবাজার, মাছসহ নানা ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। নিজেদের প্রয়োজন মতো নিয়ে যাচ্ছে সবাই। দিতে হচ্ছে না কোন দাম। এ যুগের উদ্যমী কিছু তরুণের নেয়া বিরল দৃষ্টান্ত।
জানা যায় যে, সপ্তাহে একদিন বসে এই ফ্রি হাট। যেখান থেকে ব্যাগ ভরে এক সপ্তাহের বাজার নিয়ে যান লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের মানুষরা।
এই ফ্রি হাটে সাজানো রয়েছে টাটকা সবজি যেমন লাউ, টমেটো, কাঁচা মরিচ, মাছ, পেঁয়াজ, আলুসহ ইফতার সামগ্রীও।
ফ্রি হাটে বাজার করতে আসা খাদিজা বেগম বলেন, তার স্বামী একজন পরিবহন শ্রমিক লকডাউনের কারণে বেকার হয়ে বাড়িতে বসে আছেন। বাজার খরচ মেটানো তার পক্ষে সম্ভব না। তাই তিনি ফ্রি হাটে এসেছেন। যা যা দরকার বাজার থেকে নিয়ে নিচ্ছেন তিনি।
বারেক মিয়া স্থানীয় রেল স্টেশনে ফেরিওয়ালার কাজ করেন। এখন কাজ বন্ধ। অর্থকষ্টে দিন কাটছিল তার। ফ্রি হাট থেকে তিনি একটি বড় আকৃতির পাঙ্গাস মাছ নিয়েছেন। আজ তার ছেলে মেয়েরা অনেক খুশি হবে।
'মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশনে'র সমন্বয়ক, আজহারুল ইসলাম পলাশ বলেন ফাউন্ডেশনের সদস্যরা সবাই শিক্ষার্থী। প্রথমে তারা নিজেরা চাঁদা দিয়ে এই কাজটি শুরু করেন । পরবর্তীতে অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। এলাকার যারা বিদেশে থাকেন তাদের কাছ থেকেও সহযোগিতা পাচ্ছেন তারা। বিত্তবানদের কাছে তারা যাচ্ছেন, সহযোগিতা নিচ্ছেন। অনেকে ফেসবুকে পোস্ট দেখেও আর্থিকভাবে সহযোগিতা করছেন।
ফাউন্ডেশনটির সংগঠক অনিক কুমার নন্দী জানান, প্রতি হাটে দুই শতাধিক মানুষকে বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য। সপ্তাহের প্রতি বুধবার বসে এ হাট। করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় মানুষের কথা ভেবে রমজান মাসের শুরু থেকে এমন আয়োজন করা হয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবক মিন সরকার বলেন, 'এখানে শ্রম দিয়ে মানসিকভাবে প্রশান্তি পাচ্ছি। যখন মানুষের বাজারের ব্যাগে বাজার তুলে দেই তখন তাদের মুখের দিকে তাকালে অন্য এক অনুভূতি কাজ করে'।
স্বেচ্ছাসেবক আতিকুর রহমান সোহাগ বলেন, 'অনেকে আছেন বাজার নেয়ার সময় কাঁদতে থাকেন। তখন আমাদের চোখেও পানি চলে আসে'।
অনেক মানুষ বলছে, ফ্রি বাজারের ব্যবস্থা করে তরুণরা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে মানবিকতা বা মানব সেবা করার কত সুযোগ রয়েছে। বিপদে কিভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়'।
Add new comment