Radio Veritas Asia Buick St., Fairview Park, Queszon City, Metro Manila. 1106 Philippines | + 632 9390011-15 | +6329390011-15
মহাপ্রয়াণে শান্তি রাণী সংঘের প্রথম গ্রুপের সিস্টার তেরেজা মারান্ডী
গত ৪ নভেম্বর ২০২০ খ্রিস্টাব্দে, শান্তি রাণী সংঘের প্রথম গ্রুপের সিস্টার তেরেজা মারান্ডী বার্ধক্যজনিত কারণে চিরতরে পৃথিবীর মায়া ছিন্ন করে সকাল ৯:৪০মিনিটে শান্তি রাণী কনভেন্ট, মাতৃগৃহে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
তিনি রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের অন্তর্গত চাঁদপুকুর মিশনের, মাটেন্দর গ্রামে ২৮ মার্চ ১৯৩৫ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫০ সালে প্রথম শান্তি রাণী সংঘে যোগদান করেন।
১৯৫১ সালে নব্যালয় এবং ১৯৫৩ সালে ১ম সন্ন্যাস ব্রত গ্রহণ ও ১৯৬৬ সালে আজীবন সন্ন্যাব্রত গ্রহণ করেন। তারপর ১৯৭৮ সালে রজত জয়ন্তী ও ২০০৩ সালে সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব পালন করেন।
সুপেরিয়র জেনারেল সিস্টার রেবেকা কিসপট্টা, সিআইসি বলেন, “সিস্টার তেরেজা মার্ডী সিআইসি ছিলেন আমাদের সংঘের ১ম গ্রুপের একজন সিস্টার। আমরা তার জীবন ও ব্রতীয় জীবনের আহবানের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি।”
সুপেরিয়র জেনারেল আরো বলেন, “সংঘের সূচনা লগ্ন থেকে তিনি অতি নিষ্ঠার সাথে দীর্ঘ ৬৮ বছর বিভিন্ন প্রৈরিতিক সেবাদানে ব্যাপৃত ছিলেন এমনকি বার্ধক্য জনিত কারণে অসুস্থ থাকা অবস্থায়ও তিনি মনে প্রাণে প্রৈরিতিক কাজের জন্য উদ্যোগী ছিলেন তাই বলতে পারি ক্ষুদ্র পুষ্প সাধ্বী তেরেজার মত তিনিও মনে প্রানে মন্ডলীর প্রৈরিতিক সেবা কাজে সম্পৃক্ত ভাবে যুক্ত ছিলেন।”
তিনি অন্তরে দরিদ্র থেকে ঐশ্ব রাজ্যের বাণী প্রচার করেছেন। খ্রীষ্টের বাণী প্রচারের কাজে তার মহানোভবতার উদ্যমতার জন্য আমরা শ্রদ্ধাভরে তাকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই।
ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন ধর্মপরায়ণ, প্রার্থনাশীল, মা- মারয়িার প্রতি ভক্তি, সহজ-সরল,নম্র, বাধ্য, বিশ্বস্ত, গুরু ভক্তি, দায়িত্বশীল, সংঘের প্রতি তার ছিল দরদ ও মমত্ববোধ, সংঘের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও ক্যারিজম টিকিয়ে রাখার জন্য তার অন্তরে ছিল প্রবল উদ্দ্যম ও উৎসাহ। তিনি ছিলেন শিক্ষার অনুরাগী, পরিশ্রমী, সাহসী,সংগ্রামী, ত্যাগী, মিশুক, রসিক ও হাসি-খুশী, গরীবদের প্রতি উদার ও দয়াশীল।
সিস্টার তেরেজা তার প্রৈরিতিক কর্মময় জীবনে বৃহত্তর দিনাজপুর ধর্মপ্রদেশের তৎকালীন রাজশাহী বরেন্দ্র এলাকায় পায়ে হেঁটে বিভিন্ন গ্রামে চাহিদা অনুযায়ী মফ:স্বলে বাণী প্রচার করে শিক্ষার আলো ছড়িয়েছেন। তিনি বিশেষ করে নারী জাগরণ ও শিক্ষার উপর জোর দিয়েছিলেন যার হাত ধরে গরীব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েরাও অন্ধকারে শিক্ষার আলোর পথের সন্ধান পেয়েছিল।
অবশেষে বয়সের ভারে ক্লান্ত হয়ে অনেক সময় অসুস্থতার কারণে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। হাসপাতাল থেকে আসার পর দীর্ঘ সময় তিনি শয্যাশায়ি ছিলেন। তিনি নিজের কষ্টের কথা না ভেবে অন্যের কষ্টকে গুরুত্ব দিতেন এবং তার জন্য যতটুকু করা হয়েছে তাতেই সবসময় সন্তুষ্ট ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেন এবং ধন্যবাদ কথাটি বার বার বলতেন।
সিস্টার তেরেজা মারান্ডী’র মৃত্যুতে শান্তি রাণী পরিবারের আমরা সবাই শোকাহত। তাই আজ আমরা সিস্টারের জীবনের জন্য ঈশ্বরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই এবং তার আত্নার চির শান্তি কামনা করি।- মাদার হাউজ, দিনাজপুর
Add new comment