ভারতের অ্যাপোস্টোলিক নুনসিও’র "তারা সবাই যেন এক হতে পারে" এর বই প্রকাশ

ভারতের অ্যাপোস্টোলিক নুনসিও’র বই প্রকাশ

অ্যাপোস্টোলিক নুনসিও ইকুমেনিজম সাম্যতা কে বজায় রাখার জন্য একটি পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করেছেন যার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো "ক্যাথলিক  বাস্তুতন্ত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে তারা সবাই যেন এক হতে পারেন"

গত ৩১ আগস্ট ২০২১, ভারতের নয়াদিল্লি (সিসিবিআই) জানান মহামান্য রেভ লিওপোল্ডো গিরেলি,  অ্যাপোস্টোলিক নুনসিও/ভ্যাটিকানের, ভারতীয় রাষ্ট্রদূত, শ্রদ্ধেয় অনিল জে.টি. কৌটো, দিল্লির আর্চবিশপ, ফরিদাবাদের আর্চবিশপ,  বিশপ কুরিয়াকোস ভরণিকুলাঙ্গারা, ভারতে মেথডিস্ট চার্চের, দিল্লি এপিসকোপাল এরিয়ার শ্রদ্ধেয় রেভ সুবোধ মণ্ডল,  দিল্লি ডায়োসিসের অন্তর্গত, বিলেভার্স ইস্টার্ন চার্চের জন মোর ইরেনিয়াস এবং  কনফারেন্স অফ ক্যাথলিক বিশপস অফ ইন্ডিয়ার (সিসিবিআই) পক্ষ থেকে ছিলেন শ্রদ্ধেয় ডক্টর স্টিফেন আলাতারা, সাম্যতা বোধ গড়ে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে এবং নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও উন্নত করে আমরা যেন প্রত্যেকটি খ্রীষ্টভক্ত ঐক্যবদ্ধ হয়ে উঠতে পারি সেই উদ্দেশ্যকে লক্ষ্য রেখেই  "তারা সবাই যেন এক হতে পারে"এই শিরোনামে একটি হ্যান্ডবুক প্রকাশ করা হয় নতুন দিল্লির, অশোক কমপ্লেক্স, গোল ডাকখানার কাছে অবস্থিত  আর্চ বিশপ হাউর্স ক্যাম্পাসের  ইউসুফ সদনে। 

বিগত দিনের সমস্ত রকম বিভাজন মূলক নীতির ক্ষতকে নিরাময় করে সকল খ্রীষ্টভক্ত এবং যাজকেরা যেন তাদের প্রতিদিনের বিভিন্ন কাজের মধ্যে দিয়ে স্থানীয় গির্জাঘর গুলিকে  খ্রীষ্টের এক দেহ করে তুলতে পারে সেই বিষয়ে এই পুস্তকটি বিশেষভাবে সাহায্য করবে। যার ফলে, প্রত্যেকটি গির্জা ঘরের বিশপ এবং জনগণের মূল লক্ষ্য হবে সকল খ্রীষ্টভক্তদের বিভিন্ন কার্যক্রম এবং উদ্যোগ  গ্রহণের মাধ্যমে খ্রীষ্টমন্ডলীকে পুনর্গঠিত  করা।

পুস্তকটির মধ্যে কিছু চ্যালেঞ্জিং প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে যেমন: বিভাগগুলি কি খ্রীষ্টের দেহকে দুর্বল করে দেয়নি? আমরা সকলেই কি কোনো না কোনোভাবে অবিশ্বাসের জন্য দায়ী নই এবং প্রায়ই আমাদের নিজেদের গীর্জাঘরগুলি ছাড়া অন্য গীর্জার সদস্যদের প্রতি প্রকাশ্যে শত্রুতা প্রকাশ করে থাকি। বইটির উদ্দেশ্য  দুই দশমিক 35 শতাংশ ভারতীয় খ্রীষ্টধর্মাবলম্বীদের প্রত্নতত্ত্বের অনুশীলনের হিসাবে করা নয়, বরং খ্রীষ্টকে আরো গভীরভাবে জেনে নিজেদেরকে একাত্ম করে তোলা। 

পৃথক ধর্মীয় গোষ্ঠী হিসেবে নয় বরং সমস্ত গীর্জাঘরগুলিকে খ্রীষ্টের দেহের অঙ্গ হিসেবে একত্রিত করাই হল এই পুস্তক প্রকাশের  মূল উদ্দেশ্য। এছাড়া খ্রীষ্টমন্ডলীর বিভিন্ন যাজক এবং সদস্যদের বিভিন্ন ভুল ত্রুটির জন্য চার্চ ইতিহাসের ঐক্য এবং বিভাজন নীতির সম্পর্কেও সুস্পষ্ট করে তুলবে। যার ফলে নিজেদের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব এবং বিভেদ রয়েছে  তা ভ্রাতৃত্ব এবং ক্ষমা করার প্রকৃত চেতনার উন্মেষ ঘটাবে।

  অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে, ভারতের অ্যাপোস্টোলিক নুনসিও/ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রদূত মহামান্য মোস্ট রেভ লিওপোল্ডো গিরেলি বলেন: “বইটি প্রার্থনা এবং সংলাপের মাধ্যমে দ্বিতীয় ভ্যাটিকান কাউন্সিলের দ্বারা  খ্রীষ্টভক্তদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া ভারতের সমস্ত গীর্জার সদস্যদের নিজেদের মধ্যে কথোপকথনের জন্যেও উৎসাহিত করা হয়েছে। খ্রীষ্টমন্ডলী,  প্রত্যেকটি গির্জা ঘরের সদস্যের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতা এবং ভাতৃত্ববোধ গড়ে তুলতে সর্বদা প্রচেষ্ট থাকবে।" 

পোপ জন পল দ্বিতীয় তার একলেসিয়া ইন এশিয়ায়, (1999) এশিয়ার বিশপগনকে  প্রার্থনা ও সংলাপের বিশ্বজনীন কেন্দ্র স্থাপন ও তত্ত্বাবধান করার জন্য পরামর্শ দেন। তিনি আরও বলেন যে সেমিনারি পাঠ্যসূচীতে, সমাজে  এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পাঠ্যসূচিতে ধর্মীয় সংলাপের প্রয়োজনীয়তা অত্যাবশ্যক। 

একই রকম অনুভূতির প্রতিধ্বনি দিল্লির আর্চবিশপ, মোস্ট অনিল জেটি কুটো, যিনি সাম্যবাদের প্রবর্তক তিনি সাম্যবোধ এবং ভাতৃত্ববোধের  উপর ব্যাপকভাবে বক্তৃতা দেন। 

পুস্তকটি সিসিবিআই কমিশন ফর ইকুমেনিজমের দীর্ঘদিনের গবেষণার ফলাফল যা আর্চবিশপ অনিল কৌটো, আর্চবিশপ ফেলিক্স মাচাদো, বিশপ সেলভিস্টার পন্নুমুথান, ফাদার জোস ডি কুপার এসজে, ফাদার গিলবার্ট ডি লিমা, ফাদার গিলবার্ট অরণহা, ফাদার অ্যান্থনিরাজ থুম্মা, ফাদার জোসেফ সুগুন লিওন এবং ফাদার এরোল এডি 'লিমা এস জে, শিমোগার বিশপ এবং চেয়ারম্যান শ্রদ্ধেয় রেভ ফ্রান্সিস সররাও এস জে, সিসিবিআই কমিশন ফর ইকুমেনিজমের চেয়ারম্যানের লেখা। সিসিবিআই এর সভাপতি  এবং গোয়া ও দমন এর আর্চবিশপ শ্রদ্ধেয় হিস গ্রেস ফিলিপ নেরি ফেরিও, প্রস্তাবনা লিখেছেন। - তেরেজা রোজারিও

Add new comment

6 + 1 =