বান্দরবানের একটি গির্জা ভেঙ্গে দিলো লামা বন বিভাগ

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় পাড়াবাসীর অর্থায়নে নির্মানাধীন একটি গির্জা ভেঙ্গে দিলো লামা বন বিভাগ

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ খ্রিস্টাব্দে, বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় পাড়াবাসীর অর্থায়নে নির্মানাধীন একটি গির্জা ভেঙ্গে দিলো লামা বন বিভাগ।

সাথীরাম ত্রিপুরা পাড়ার কারবারী ও পাড়াবাসী অভিযোগ করে বলেন, লামা বনবিভাগ থেকে পাঠানো বন টিমের স্পেশাল টহল বাহিনীর প্রধান (ওসি) মোঃ আতিকুল ইসলাম ও মাতামূহুরী সংরক্ষিত বনের রেঞ্জ কর্মকর্তা জহির উদ্দিন মোঃ মিনার চৌধুরীর নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটায় ।

মাইকেল ত্রিপুরা বলেন, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বেলা ১২টার সময় লামা বনবিভাগ থেকে আগত বনটিমের বিশেষ টহল বাহিনীর প্রধান ওসি মোঃ আতিকুল ইসলামসহ আরো ৮ থেকে ১০ জন লোক এসে আমাদের কিছু না জানিয়ে পাড়াবাসির একমাত্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নতুন করে নির্মিত গির্জাটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে।

তারা বলেন, আমরা ঘটনাটির বিষয়ে আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সায়েদ ইকবাল, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মংব্রাচিং মার্মা ও জেলা পরিষদ সদস্য ধুংরিমং মার্মাকে মৌখিক ভাবে অভিযোগ দিয়েছি।

তারা আরো বলেন দুইপাড়ার লোকজন দীর্ঘ ১৫ বছর অর্থ সঞ্চয় করে পাড়া থেকে দশহাত দূরে এ গির্জাটি তৈরী করছিলাম। শুক্রবার এ ঘটনায় সরজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, আলীকদম উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মংব্রাচিং মার্মা, বান্দরবান জেলা পরিষদ সদস্য ধুংরি মার্মা, উপজেরা আওয়ামীলী সহসভাপতি সমর বড়ুয়া, আলীকদম ত্রিপুরা কল্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফিলিপ ত্রিপুরা ও দূর্জয় ত্রিপুরা।

বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য ধুংরি মং মার্মা জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখ্যজনক। পাড়াটি অনেক পুরনো। তারা নির্মাধীন গির্জা ভেঙ্গে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। আলীকদম ত্রিপুরা কল্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফিলিপ ত্রিপুরা জানান, গির্জা ভেঙ্গে বনবিভাগ আমাদের খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবী করছি।

লামা বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়চার জানান, আমরা কোন গির্জা ভাঙ্গিনি। আমরা সংরক্ষিত বনে অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গেছি মাত্র। মাতামূহুরী রিজার্ভে কোন স্থাপনা তৈরী করতে বন বিভাগের অনুমতি লাগে। তারা  আমার কাছ থেকে কোন অনুমতি নেয়নি। তিনি এ সময় আরো জানান, তিন চারটি ত্রিপুরা ঘর নিয়ে গির্জা তৈরী করার কোন প্রয়োজন নেই। ঐখানে কোন গির্জা নেই আছে শুধু সন্ত্রাসী।

তিনি আরো বলেন, কয়েকজন লোকের গির্জা করার প্রয়োজন নাই এটা খুবই আপত্তিকর কথা যা কোনোভাবেই গ্রহণ করতে পারছি না। দায়িত্ব জ্ঞানহীন বক্তব্য না দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে এ গির্জা ভাঙ্গার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ খ্রীষ্টান এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও।

তিনি বলেন, ‘আলী কদমের ওই সাথীরাম ত্রিপুরা পাড়ার গির্জা যারা ভেঙ্গেছেন তাদের নিন্দা জানাই ও এই ঘটনা তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমি স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই। ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করে এমন ঘটনা কোনো পক্ষই যেন না ঘটায়। ছোট-বড় যে কেন গির্জাই হোক না  কেন গির্জা ভাঙ্গার কারো অধিকার নাই।”- তথ্য সহায়তায় ডিসিনিউজ ।

Add new comment

1 + 9 =