বাংলায় এবারের দুর্গা পুজো

দেবী দুর্গার উপাসনা এবং উৎসব

এক বছর পরে দেবী দুর্গার উপাসনা এবং উৎসব মরসুমটি বাংলাভাষী সম্প্রদায়ের বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ, ভারত এবং বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য এসেছে। দেবী দুর্গার পুজো পশ্চিমবঙ্গের একটি প্রধান অনুষ্ঠান।

এই সময়ে লোকদের মধ্যে উৎসবের আমেজ দেখা যায়। দুর্গা পুজো এই বছর শুরু হয়েছে ২৩ অক্টোবর থেকে এবং চলবে ২৬ অক্টোবর ২০২০ অবধি। দুর্গা পুজো শুধু ভারত ও বাংলাদেশে উদযাপন হয়ে থাকে না l পৃথিবীতে যেসব জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাঙালি বসবাস করেন সেখানেই এই পুজো হয়ে থাকে গভীর নিষ্ঠার সাথে l

তবে কোভিড ১৯ ভাইরাসের কারণে এবার অন্যান্য বছরের চেয়ে পরিস্থিতি কিছুটা আলাদা। পশ্চিমবঙ্গে কলকাতা হাইকোর্ট কিছুটা এই পুজোর উদযাপনকে সীমাবদ্ধ করেছে যাতে এই সপ্তাহটি কোনও ‘সুপার স্প্রেডিং সপ্তাহ না হয়ে ওঠে l মানুষ হাইকোর্টের এই রায়ে খুশি নয় তবুও তারা এটি মেনে চলছে l

কলকাতা হাইকোর্টের আদেশ অনুসারে সমস্ত উপাসনালয়ে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ। প্রতিটি পুজো কমিটির কয়েক জন এবং নির্বাচিত সদস্যদের পুজোর ক্রিয়াদি করার জন্য দেবী দুর্গার মূর্তির কাছে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে l পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার মাস্ক এবং স্যানিটাইজার ক্রয়ের জন্য প্রচুর পরিমাণে অর্থ বরাদ্দ করেছে।

এক গৃহবধূ শুভ্রা পাল আমাদের জানালেন, “কলকাতা হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞাগুলোর ফলে তারা বাড়িতে ছোটো থেকে বড় সবাই ঘরে বসে আছেন এবং ইন্টারনেটে বা TV তে ঠাকুর দেখছেন l শিশুরা বেশিরভাগ মনে মনে হতাশ। এমনকি বয়স্করাও এই বছর খুশি নয়।“

হিন্দু পুরাণ অনুসারে দেবী দুর্গাকে তাদের কন্যা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। দেবী দুর্গাকে উমাও বলা হয়। উমা হিসাবে, কন্যা দেবী দুর্গা এক বছর পরে তাঁর কন্যা, দেবী লক্ষ্মী এবং সর্বস্বতী এবং পুত্র দেবতা গণেশ এবং কার্তিককে নিয়ে তার বাবা-মার বাড়িতে ফিরে আসেন। এটি একটি আনন্দের এবং উপভোগের বিষয়। চার দিন পরে দেবী দুর্গা তাঁর সব সন্তানকে নিয়ে কৈলাশ পর্বতে স্বামী ভগবান শিবের কাছে ফিরে আসেন।

এই উপাসনা উদযাপনের জন্য ‘প্যান্ডেল’ নামে অস্থায়ী মন্দিরগুলো বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোর প্রতিরূপে বাঁশ, প্লাই কাঠ এবং কাপড় ব্যবহার করে নির্মিত হয়। আলংকারিক আলোর প্রচুর ব্যবহার দেখা যায়। লোকেরা সারা দিন এই সমস্ত দেখতে ভিড় করে এবং প্রায়শই ভিড় কয়েক হাজারে পৌঁছে যায়। এই উৎসবটির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হ'ল মাটি, খড় এবং বাঁশ ব্যবহার করে তৈরি করা দেবী দুর্গার প্রতিমার এক ঝলক পেতে সমস্ত ধর্ম ও বিশ্বাসের লোকদের প্যান্ডেলগুলোতে ভিড় করতে দেখা যায়। লোকেরা প্যান্ডেল এবং আলোকসজ্জা দেখতে এক প্যাণ্ডেল থেকে অপর প্যাণ্ডেল ঘুরে বেড়ায়। দুর্গাপুজো যথাযথভাবে একে অপরের মধ্যে মেলামেশা ও সম্পর্ক উন্নতির উৎসব।

এই বছর মহামারীর কারণে এগুলো বেশ কমে গেছে। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত অবধি প্যান্ডেলগুলো দেখতে না পারায় লোকেরা মনের দুঃখ বোধ করলেও তারা তাদের উৎসবের মেজাজটি হারায়নি। তবুও দেবী দুর্গাকে এই বছরও সমগ্র বাংলাভাষী সম্প্রদায়ের মানুষ স্বাগত জানিয়েছে যেমন বছরের পর বছর হয়ে এসেছে।-অতনু দাস, বাংলা বিভাগ।

 

Comments

বাংলায় এবারের দুর্গা পুজো নিয়ে বেশ সুন্দর একটা প্রতিবেদন পরে খুবই ভালো লাগলো l বর্তমান পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে l আন্তরিক ধন্যবাদ RVA কে l

No comment

I am very much pleased to reading your article on Durga Puja in Bengal. You are described very nicely in short about the festival.
Thank you.
Shubho Bijaya.
Shivendu Paul
Metali Listeners Club
Murshidabad
West Bengal
India

Add new comment

4 + 2 =