বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হলো গ্লোবাল প্রেয়ার ওয়ারিয়র কনফারেন্স

করোনা ভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারির সময়ে অনলাইনে এরূপ একটি প্রার্থনা আয়োজন যেমন যথোপযুক্ত, তেমনি “সামাজিক দূরত্ব”- থাকা সত্বেও, প্রার্থনার মাধ্যমে খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের মধ্যে মিলন (কমূনিয়ন) বা ঐক্য সৃষ্টির একটা মহতী প্রচেষ্টা। তাছাড়া “তারা যেন এক হয়” যিশুর এই প্রার্থনার সঙ্গে একটা সামঞ্জস্য রেখে, তাঁর নির্দেশের প্রতি শিষ্যদের আনুগত্যের একটা সুন্দর অভিপ্রকাশও এ আয়োজনের মাধ্যমে ঘটছে।

কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও বলেন, “গ্লোবাল প্রেয়ার ফেলোশিপ” কর্তৃক, দ্বিতীয়বারের মতো অনলাইনে “গ্লোবাল প্রেয়ার ওয়ারিয়র কনফারেন্স” আয়োজনের জন্য আমি আমার নিজের পক্ষ থেকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি।

কার্ডিনাল বলেন, আমি আরও একটি কৃতজ্ঞতার বন্ধন অনুভব ক’রে, এই প্রার্থনায় মিলিত হচ্ছি: “গ্লোবাল প্রেয়ার ওয়ারিয়র কনফারেন্স”-এর প্রথম প্রার্থনা-অনুষ্ঠানে, আমি যখন অসুস্থ ছিলাম, তখন আপনারা অনেকে আমার জন্য পরম করুণাময় প্রভুর কাছে প্রার্থনা নিবেদন করেছিলেন। আজ আমি সবার প্রার্থনার ফলে, প্রভুর সুস্থতা লাভ করেছি। আপনাদের সাথে এই প্রার্থনা-অনুষ্ঠানে মিলিত হয়ে পরম প্রভুর প্রশংসা করি এবং আপনাদের নিকটও আমার অন্তরের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি। প্রভুর প্রশংসা হোক! তাঁর নামের মহিমা হোক!

বাইবেল পাঠ অনুসারে, এই উপস্থাপনার মূল বিষয় হচ্ছে: “তার যেন এক হয়”। এই আলোচনায় “এক হওয়া”, “মিলন”, “ঐক্য”, “একাত্মতা” শব্দগুলো প্রায় সমার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

“এক হওয়ার জন্য অন্তর্মুখী যাত্রা: জাগতিকের মধ্যে আত্মিক, বাহ্যিকতার মধ্যে অন্তরের দিকে যাত্রা; বৃহত্তর থেকে ক্ষুদ্রে যাত্রা, বাইরে থেকে ভেতরে যাত্রা, বিজ্ঞানে অনু-পরমানু আবিষ্কারের জন্য যাত্রা; এই ধারার মধ্যে ধর্মও কিন্তুু সবকিছুর হৃদয় বা অন্তর অনুসন্ধান করার কাজে রত থাকে, বলেন ডি’রোজারিও”।

সুতারাং বর্তমান বিশ্বায়ন যুগে এক হওয়া বা মিলনের জন্য খ্রিষ্টমন্ডলীর যাত্রা হবে খ্রিস্টকেন্দ্রিক ও খ্রিষ্ট  নির্দেশিত যাত্রা: “তারা যেন এক হয়”। খ্রিষ্টমন্ডলীর ঐক্য প্রচেষ্টার জন্যও প্রথমতঃ তৃণমূল থেকে শুরু করতে হবে, যেখানে থাকবে: খ্রিষ্ট কেন্দ্রিক ব্যক্তি জীবন, পরিবারিক, সামাজিক, মাণ্ডলিক এবং আভ্যন্তরীণ জীবনসাধনা এবং খ্রিস্টীয় সাংগঠনিক অবকাঠামো ও বাণী প্রচার।

সাম্প্রতিক করোনা-আক্রান্ত দুর্যোগকালে “এক হওয়া” বা “মিলন”-এর নিদর্শন ও তার অভাব যেমন লক্ষণীয়, ঠিক তেমনি আরেকটি নিদর্শনও সুস্পষ্টভাবে লক্ষণীয়, আর তা হল “প্রত্যাশা”। দুর্যোগের এই কঠিন মুহূর্তে অনেক ভালোর সন্ধান মিলছে যা মানুষকে প্রত্যাশী ক’রে তুলছে। এখানে সকল ধর্ম, বিশেষভাবে খ্রিস্টধর্ম ইতিবাচক দিকগুলো সংগ্রহ করছে এবং ভবিষ্যতে “মিলনের” পথ চিহ্নিত করে মানুষকে আশান্বিত এবং উদ্বুদ্ধ করছে। অতএব খ্রিষ্ট বিশ্বাসী আমরা, সুসমাচারজনিত প্রত্যাশার পথ ধরে “এক হওয়ার” যাত্রায় ভবিষ্যতেও নিবিষ্ট থাকব।

পরিশেষে কার্ডিনাল বলেন, আমাদের প্রার্থনা হোক যিশুর প্রার্থনা; আমাদের প্রার্থনা হোক আগামী দিনের মিশন; আমাদের প্রার্থনা হোক “এক হওয়ার” প্রত্যাশা।

“প্রভু যিশু খ্রিস্টেও অনুগ্রহ, পিতা ঈশ্বরের প্রেম এবং পবিত্রতা একাত্মতা আপনাদের মধ্যে বিরাজ করুক।” আমেন । 

Add new comment

6 + 1 =