ন্যায্যতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় ‘ফ্রাতেল্লী তুত্তি’ (সকল ভাইবোন) বিষয়ক সেমিনার

‘ফ্রাতেল্লী তুত্তি’ (সকল ভাইবোন) বিষয়ক সেমিনার

পোপ ফ্রান্সিস এর ভ্রাতৃত্ববোধ ও সামাজিক মিলন বিষয়ক সর্বজনীন প্রৈরিতিক পত্র “ফ্রাতেল্লী তুত্তি (সকল ভাইবোন)” এর অনুপ্রেরণায় খ্রিস্টভক্তগণ পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব নবায়ন ও সামাজিক বন্ধন দৃঢ়করণে কিছু উপলব্ধি গ্রহণএবং দয়ালু সামারীয়র আদর্শ অনুসরণে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন।

বিশপীয় ন্যায় ও শান্তি কমিশনের উদ্যোগে গত মাসে ঢাকা আর্চ-ডাইওসিস এর পবিত্র জপমালা রাণীর ধর্মপল্লী-হাসনাবাদ এর পালকীয় পরিষদ, ন্যায় ও শান্তি কমিটি এবং সমাজ প্রধানসহ ৬০জন খ্রিস্টীয় নেতানেত্রীগণের অংশগ্রহণে “ন্যায্যতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় ফ্রাতেল্লী তুত্তি (সকল ভাইবোন)” বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

বিশপীয় ন্যায় ও শান্তি কমিশনের সেক্রেটারি ড. ফা. লিটন হিউবার্ট গমেজ সিএসসি বলেন, “পোপ ফ্রান্সিস গত ৪ অক্টোবর সর্বশেষ সর্বজনীন পত্র “ফ্রাতেল্লী তুত্তি” (ভাইবোন সকল) প্রকাশ করেছেন। এই পত্রে তিনি বিশ্বের সকল জাতি, সকল ধর্ম ও সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও মিলন সমাজ গঠনের ডাক দিয়েছেন।”

ফ্রাতেল্লী তুত্তি” পাঠ করে আমরা পৃথিবীতে কেন এত অন্যায়, অশান্তি, বৈষম্য, শোষণ, ব্যক্তিগত বিচ্ছেদ ও সামাজিক বিভেদ সম্পর্কে সচেতন হতে পারি। পোপ মহোদয় ঠিকই লিখেছেন যে এসব অন্যায় অবিচার আর বৈষম্য শোষণ মাত্র ধর্মবিশ্বাস ও ভালবাসা দিয়েই দূর করা সম্ভব।

তিনি আরো বলেন, “পত্রটি সত্যিই বিশ্বের নিকট মানব মর্যাদা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি মঙ্গলবার্তা। পত্রটি কেন্দ্রে বাইবেলের দয়ালু সামারীয়ের ভ্রাতৃপ্রেমের আদর্শ অনুধ্যানে বলেন- প্রত্যেকে অন্তর গভীরে তাকালে বুঝতে পারি আমরা কেউ কেউ আহত পথিক, কেউ কেউ নিঠুর দস্যু বা হিংস্র ডাকাত, কেউ কেউ ভীতু যাজক, কেউ কেউ রক্ষণশীল লেবির ভূমিকায় রয়েছি। আবার অনেকে দয়ালু সামারীয়র ভূমিকায় থেকে সেবার আদর্শ স্থাপন করে যাচ্ছি, যা আরও বাড়াতে হবে এবং অন্যদের অনুপ্রাণিত করতে হবে।”

আমরা সকলে সমাজে লড়াই ও সংগ্রাম করে চলছি; পোপ ফ্রান্সিস আহ্বান করছেন আমরা যেন নিজের অবস্থানে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সামাজিক মিলন গড়ে তুলে একসাথে মানব মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠাকরণে আপ্রান চেষ্টা করি।

নেতাত্রেীগণ প্রত্যেকে কষ্টভোগী উত্তম মেষ পালক যিনি ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত ক্রুশ বহন করতে প্রস্তুত, যিনি পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ ও ভ্রাতৃসমাজ পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তৎপর, যিনি ভেঙ্গে যাওয়া সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট এবং যিনি মণ্ডলীর দিক্নির্দেশনা সকলের মাঝে বিস্তার করে থাকেন,” বলেন ফাদার।  

কারিতাস সিডিআই এর প্রশিক্ষক চয়ন হিউবার্ট বলেন, “সমাজের ভ্রাতৃত্ব, ন্যায় ও শান্তি বিষয়ক কিছু বাস্তব অবস্থা বিশ্লেষণে অংশগ্রহণকারীদের সহায়তা করেন”।

তিনি বলেন, “মুক্তালোচনায় অংশগ্রহণকারীগণ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করেন আর তা হলো দয়ালু সামারীয়র মত নিজেরা সমাজের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সাথে যাত্রা করবেন এবং পালকীয় সেবা প্রদান করতে আরও দায়িত্বশীল হবেন, ন্যায় ও শান্তি কমিটি আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে, পারিবারিক দ্বন্দ্ব নিরসণে দম্পতিদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন পর্যায়ে সেমিনার আয়োজন করবেন, প্রকৃতি, পরিবেশ ও পরিবারের সুরক্ষায় (নারী-শিশু সুরক্ষা, প্রার্থনা গতিময় ও ব্যয় সংকোচন) সমাজে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন, ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে ক্রেডিট ইউনিয়নের সাহায়তায় সেমিনার আয়োজন করবেন, মাদক ও মাদকাসক্ত বিষয়ে সেমিনার ও সচেতনা প্রদান করবেন এবং জমিজমা সংক্রান্ত মামলাসমূহ নিয়ে নিজ সমাজে সচেতনা প্রদান করবেন”।

পরিশেষে পাল-পুরোহিত ফাদার স্ট্যানিসলাউস গমেজ ধন্যবাদ বক্তবের মাধ্যমে সেমিনার সমাপ্ত ঘোষণা করেন।- কমিশন ডেস্ক

 

Add new comment

1 + 3 =