গত ১৮-২০ ফেব্রুয়ারী ২০২১ খ্রিস্টাব্দে, ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশীয় যুব কমিশনের আয়োজনে ঢাকা আর্চডায়োসিসান সেন্টার, রমনায় “এনিমেটর: যুবা সহযাত্রী” উক্ত মূলসুরের যুবা এনিমেটর গঠন প্রশিক্ষণ কোর্স অনুষ্ঠিত হয়।
এই কোর্সের উদ্বোধনী খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করেন পরম শ্রদ্ধেয় বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজ, সহকারী ধর্মপাল, ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশ।
তিনি তার উপদেশ বাণীতে বলেন যে, এনিমেটর হওয়া এর অর্থ হল একটি আহ্বানে সাড়া দান করা। যখন আমরা অন্তর-মনে যীশুর সাথে যুক্ত হই তখন যীশু আমাদের সহযাত্রী হন কিংবা আমরা যখন যীশুর সহযাত্রী হই তখন আমরা অন্যের মধ্যে জীবন আনায়ন করতে পারি। জীবন সঞ্চার করা কঠিন কাজ। যীশু জীবন দানের মধ্য দিয়ে আমাদের জন্যে নব জীবন এনেছেন তেমনি আমাদের অন্যের মধ্যে জীবন সঞ্চার করতে হলে নিজেদের গঠন করতে হয়, ত্যাগস্বীকার করতে হয়, জীবন থেকে অনেক কিছু বাদ দিতে হয়। এই ত্যাগস্বীকার করার মধ্য দিয়ে আমরা যুবক-যুবতীদের সেবা করতে পারি।
সেমিনারের শুরুতে সকল যুবাদের মঙ্গল ও আলোকিত জীবন কামনায় পঞ্চ প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হয়। এরপর বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজ সহ একজন এনিমেটর এবং অংশগ্রহণকারী যুবা ভাই-বোনদের মধ্য থেকে তিনজন প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন।
উক্ত কোর্সের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যক্ত করেন যুব সমন্বয়কারী শ্রদ্ধেয় ফাদার নয়ন লরেন্স গোছাল। তিনি বলেন, যীশুই হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ এনিমেটর বা জীবন সঞ্চারী কেননা তিনি সর্বপ্রথমে নিজ জীবন দিয়ে মানুষের জন্যে নব জীবন আনায়ন করেছেন। তাই যীশুর সাথে যাত্রা করলে বা তাঁর সহযাত্রী হলে আমরা প্রথমে নিজেরা আলোকিত হই; জীবন পাই এবং পরে অন্যদের আলোকিত করতে পারি এবং জীবন সঞ্চার করতে পারি।
তিনি আরো বলেন, একজন যুব এনিমেটর হিসাবে যুবাদের মাঝে খ্রিষ্টিয় জীবন সঞ্চারে সেবা কাজ করার মধ্য দিয়ে একজন যুবা যথার্থ এনিমেটর হয়ে উঠতে পারে।
এই কোর্সের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হল সমগ্র ধর্মপ্রদেশে যুবাদের মধ্যে প্রাণ সঞ্চারে এবং বিভিন্ন যুব আন্দোলনে ধর্মপল্লীতে অবস্থানকারী যাজকদের সাথে সহদায়িত্বশীল হয়ে যুব সেবায় ও কার্যক্রমে সহযোগী হওয়া।
এই কোর্সে যে সমস্ত আলোচনা করা হয় তা হচ্ছে; এনিমেটর কে? তার প্রয়োজনীয়তা, যুব গঠনে ও যুব কার্যক্রমে তার ভূমিকা, সঙ্গ, সৃজনশীলতা ও দায়িত্ব-কর্তব্য- এর উপর সহভাগিতা করেন এপিসকপাল যুব কমিশনের সমন্বয়কারী ব্রাদার উজ্জ্বল পেরেরা, সিএসসি।
এরপর এনিমেটরদের দক্ষতা ও গুণাবলী আলোচনা করেন ফাদার পিটার শ্যানেল গমেজ এবং এনিমেশন, সঞ্চালনা, উপস্থাপনা, অভিনয়, ঘোষণা অনুশীলন এর উপর বিশেষ অধিবেশন পরিচালনা করেন মি: তিয়াস পালমা।
এছাড়াও ছিলো দলীয় আলোচনা এবং প্রতিবেদন পেশ। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সার্টিফিকেট বিতরণ।
সমাপনী খ্রিষ্টযাগ উৎসর্গ করেন আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’ ক্রুজ ওএমআই। তিনি খ্রিষ্টযাগের উপদেশে যুবাদের খ্রিষ্টিয় বিশ্বাসে গঠন লাভের উপর তিনি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
একই সাথে তিনি বলেন যে, যীশু হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ এনিমেটর যিনি সেবা পেতে নয় সেবা করতে এ জগতে এসেছিলেন এবং সেবা করেছেন। সেবা করতে করতে তিনি নিজের প্রাণ বিসর্জন করেছেন তাই আমরা এনিমেটর হতে চাইলে আমাদের সেবক হতে হবে।
তিনি আরো বলেন, সেবা মুখের কথা নয়, সেবা হল জীবন সাক্ষ্য দান করা। আমি বিশ্বাস করি তোমরা এখান থেকে যা শিখেছ তা নিজ নিজ স্থানে কাজে লাগাবে। খ্রিষ্টযাগের পর আর্চবিশপ মহোদয় কোর্সের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
উক্ত কোর্সে ৩৩ জন ছেলে এবং ১৮ মেয়ে মোট ৫১ জন অংশগ্রহণকারী, কমিশনের ১৪ জন এনিমেটর, ১জন ফাদার ও ১ জন সিস্টারসহ মোট ৬৬ জন এতে অংশগ্রহণ করে।-নিশাত এ্যান্থনী
Add new comment