Radio Veritas Asia Buick St., Fairview Park, Queszon City, Metro Manila. 1106 Philippines | + 632 9390011-15 | +6329390011-15
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো ওয়ানগালা উৎসব
গত ৪ ডিসেম্বর ২০২০ খ্রিস্টাব্দে, নকমা ফ্রান্সিস প্রতাপ কুবির নেতৃত্বে লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী ওয়ানগালা উৎসব।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা বলেন, ‘মূলত আদিবাসীরাই ধরিত্রিমাতাকে নির্ভীকভাবে রক্ষ করে আসছে। তারা প্রকৃতিকে নিজের মায়ের মতো ভালবাসে ও যত্ন করে। আজকের এই ওয়ানগালা উৎসব হলো শষ্য দেবতাকে ধন্যবাদ জানানো। ধন্যবাদ শব্দটি অনেক কঠিন, এর মূল্য অনেক বেশি। তাই ধন্যবাদের সাথে সাথে প্রকৃতিকেও রক্ষা করতে হবে। গারো এবং অন্যান্য জাতিগোষ্ঠি ঐতিহ্যগতভাবেই এই ধরিত্রীকে রক্ষ করে আসছে।’
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, ‘গারো ভাইবোনেরা প্রতি বছর এই উৎসবটি পালন করে আসছে। তাদের প্রথম ফসল তারা শষ্য দেবতাকে উৎসর্গ করে ধন্যবাদ জানায়। সেই সাথে ধরিত্রিমাতাকে রক্ষার দায়িত্বও আদিবাসী ভাইবোনেরা পালন করে। তাই আদিবাসী ভাইবোনেরা খারাপ থাকলে, ধরিত্রিমাতাও কষ্ট পাবে। এ জন্য আদিবাসীদের অধিকারগুলোও আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে।’
রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বলেন, ‘আমি দেখেছি কিভাবে আদিবাসী ভাইবোনেরা নদী, বন, পাহার, প্রকৃতিকে আগলে রাখে। আদিকাল থেকেই এই দায়িত্ব আদিবাসী ভাইবোনেরা পালন করে আসছে। আজ এই আনন্দ অনুষ্ঠানে আসতে পেরে সত্যিই আমি ধন্য মনে করছি।’
অভিনেতা ও নাট্যকার মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আমি সব সময় আদিবাসীদের সাথে মিশে থাকি। তারা প্রকৃতির পূজারী। ধরিত্রিমাতাকে তারা নিজের মায়ের মতোই ভালবাসে এবং যত্ন নেয়। তাই আমাদের ভাল থাকতে হলে, আদিবাসী ভাইবোনদের সকল অধিকার সংরক্ষণ করতে হবে এবং পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব তাদের দিলে ভুল হবে না। আজকে ধরিত্রিমাতাকে ধন্যবাদ জানাতে ওয়ানগালা অনুষ্ঠান হচ্ছে, যা সত্যিই অনেক আনন্দের।’
এ দিন সকালে জাতীয় সংগীতের মাধম্যে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর অতিথিরা বেলুন উড়িয়ে শোভাযাত্রার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন।
শষ্য দেবতাকে সম্মান জানাতে গারো ভাইবোনেরা নিজস্ব কৃষ্টিতে তাদের শষ্যদানা শষ্য দেবতাকে উৎসর্গ করেন। ওয়ানগালা অনুষ্ঠান উপলক্ষে ‘আমাদের সংস্কৃতি-আমাদের অহংকার’ নামে একটি স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। অনুষ্ঠানে অতিথিদের উত্তরীয় পড়িয়ে সম্মান জানানো হয়।
এ ছাড়াও গারো সংস্কৃতির বিভিন্ন উপস্থাপনা ও হরেক পণ্যের স্টল ওয়ানগালা উৎসবকে আরো প্রাণবন্ত করে তোলে।
মূলত গারো ভাইবোনেরা প্রতি বছর আগমনকালে খ্রিষ্টরাজার পর্বোৎসবে এই ওয়ানগালা পর্বটি পালন করে থাকে। তাদের জমির প্রথম ফসল তারা সৃষ্টিকর্তার প্রতি উৎসর্গ করে। ঢাকা শহরে গারোদের একটি বৃহৎ অংশ বসবাস করায় প্রতি বছর শহরকেন্দ্রীক গারো ভাইবোনেরা এই উৎসবটি ডিসেম্বর মাসে পালন করে।
ওয়ানগালা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ-১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জুয়েল আরেং এমপি; রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা; অভিনেতা ও নাট্যকার মামুনুর রশীদ; হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল রোজারিও; ঢাকা ক্রেডিটের প্রেসিডেন্ট পংকজ গিলবার্ট কস্তা; সেক্রেটারি ইগ্নাসিওস হেমন্ত কোড়াইয়া; গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হেমন্ত হেনরী কুবি; লেখক, কলামিস্ট ও সংস্কৃতিকর্মী সঞ্জীব দ্রং; কারিতাস বাংলাদেশের প্রশাসন ও অর্থ পরিচালক সেবাস্টিয়ান রোজারিও; সিডিআই পরিচালক থিওফিল নকরেক; ঢাকা ক্রেডিটের ট্রেজারার রতন পিটার কোড়াইয়া; বোর্ড অব ডিরেক্টর প্রত্যেশ রাংসা; ক্রেডিট কমিটির সদস্য অন্তর মানখিন; প্রাক্তন বোর্ড অব ডিরেক্টর জন নিলু চাম্বুগংসহ আরো অনেকে।-ডিসিনিউজ
Add new comment