আজ কোলকাতার সাধ্বী মাদার তেরেজা’র ২৩তম প্রয়াণ দিবস

সারা বিশ্ব আজ সাধ্বী মাদার তেরেজাকে স্মরণ ও মনন করছে l আলবেনীয়-বংশোদ্ভুত ভারতীয় ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনী ও ধর্মপ্রচারক অ্যগনিস গঞ্জা বোজাঝিউ'র; (Agnes Gonxhe Bojaxhiu) জন্ম আগস্ট ২৬, ১৯১০ এবং তিনি আমাদের পরম পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে যান ৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭ সালে l

মৃত্যুকালে তাঁর বয়ষ হয়েছিলো ৮৭ বছর। 

অ্যগনিসের জন্মস্থান অটোমান সাম্রাজ্যের আলবেনিয়া রাজ্যের স্কপিয়ে। আঠারো বছর বয়স পর্যন্ত তিনি সেখানেই কাটান। ১৯২৮ সালে তিনি আয়ারল্যান্ড হয়ে তৎকালীন ব্রিটিশ উপনিবেশ ভারতে খ্রিস্টধর্ম প্রচার অভিযানে আসেন। উল্লেখ্য জীবনের বাকি বছরগুলো তিনি ভারতেই থেকে যান। 

দ্য মিশনারিজ অফ চ্যারিটি আর্ত মানুষের সেবায় ব্রতী এই মহীয়সী বহু সম্মান দেশে ও বিদেশে প্রাপ্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখ্য নোবেল শান্তি পুরস্কার (১৯৭৯), ভারতরত্ন (১৯৮০), প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম (১৯৮৫), বালজান পুরস্কার (১৯৭৮)। 

১৯৫০ সালে তদানীন্তন মহামান্য পোপ মহোদয়ের অনুমতি নিয়ে কলকাতায় তিনি 'দ্য মিশনারিজ অফ চ্যারিটি' (The Missionaries of Charity) নামে একটি খ্রিস্টান দাতব্য সেবা সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন।

এই সংঘের সাথে যুক্ত আছেন দেশ ও বিদেশ থেকে কয়েক হাজার সন্ন্যাসিনী। প্রথমে কলকাতার রাস্তায় ও বস্তি এলাকায় তারপর ভারতে ও পরে সমগ্র বিশ্বে তাঁর এই দুঃস্থ মানুষের প্রতি সেবা কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ে। তিনি তাঁর এই কাজে ধর্মের থেকেও মানব জাতিকে বড় করে দেখেছিলেন l

২০১৬ সালে পোপ ফ্রান্সিস তাকে 'সন্ত' হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন এবং তিনি 'কলকাতার সন্ত টেরিজা' হিসেবে আখ্যায়িত হন l 

সাধ্বী মাদার তেরেজা’র মৃত্যুর সময় বিশ্বের ১২৩টি রাষ্ট্রে মৃত্যু পথযাত্রী এইডস, কুষ্ঠ ও যক্ষ্মা রোগীদের জন্য চিকিৎসাকেন্দ্র, ভোজনশালা, শিশু ও পরিবার পরামর্শ কেন্দ্র, অনাথ আশ্রম ও বিদ্যালয়সহ' দ্য মিশনারিজ অফ চ্যারিটি'র মোট ৬১০টি কেন্দ্র কার্যকরী ছিল।

আসুন আজ বিনম্র চিত্তে, মানব সেবায় এবং মানুষের কল্যাণ এবং হিতকর ব্রতে ও আদর্শে অনুপ্রাণিত আমাদের জনদরদী মায়ের আজ এই মৃত্যু দিবসে তাঁর চরণ যুগলে ভক্তিপূর্ণ প্রণাম জানাই l

আর আমাদের পরম পিতার কাছে প্রার্থনা করি যে,  সাধ্বী মাদার তেরেজা’র আদর্শকে যেন আমরা আমাদের নিজেদের জীবনের চলার পথে পাথেয় করে চলতে পারি l - অতনু দাস  

 

Add new comment

3 + 1 =