Radio Veritas Asia Buick St., Fairview Park, Queszon City, Metro Manila. 1106 Philippines | + 632 9390011-15 | +6329390011-15
আন্ধারকোঠার গোপন রহস্য । ঢাকার চিঠি
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা ইতিহাস ও ঐতিহ্য ভরা এক স্থান। যেখানে নিজে ঘুরতে না এলে বুঝা যবে না।
নবাবগঞ্জ উপজেলার কলাকোপা ইউনিয়ন গ্রামের ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক পুরাতন স্থাপনা।
গুলিস্তান থেকে বাসে সহজেই আসা যায় ঢাকার নবাবগঞ্জ। উপজেলা সদর বাসস্ট্যান্ড থেকে দোহারের পথে যেতে হয় কলাকোপা ইউনিয়ন। কলাকোপা থেকে ছোট্ট একটি রাস্তা চলে গেছে বান্দুরার দিকে। সেই পথেই পড়বে খেলারাম দাতার মন্দির বা আন্ধারকোঠা।
খেলারাম দাতা সম্পর্কে স্থানিয়দের মধ্যে নানা কথা প্রচলিত রয়েছে। কেউ বলেন, তিনি ছিলেন জমিদার। আবার কারও মতে, তিনি ছিলেন ভয়ানক দস্যু বা ডাকাত।
তবে ইতিহাস বলে খেলারাম দানশীল ব্যক্তি ছিলেন । তার কাছে সাহায্য চেয়ে কেউ কখনো নিরাশ হন নি। তিনি ধনীদের কাছ থেকে ডাকাতি করে টাকাপয়সা, মালামাল গরিবদের বিলিয়ে দিতেন।
কথিত আছে, খেলারাম দাতার বাড়ি থেকে ইছামতীর পাড় পর্যন্ত সুড়ঙ্গ পথ ছিল। নদীপথে ধনসম্পদ এনে এ সুড়ঙ্গ পথেই বাড়ি নিয়ে আসতেন তিনি। শেষ জীবনে তিনি অতিশয় ধার্মিক ব্যক্তিতে পরিণত হন।
খেলারাম এর মা একবার আম-দুধ খেতে চাইলে তিনি বাড়ির উপর বিশাল চৌবাচ্চা তৈরি করে তাতে আম দুধ দিয়ে ভর্তি করে তার পর মা কে নিয়ে এসে নামিয়ে দেন সেই চৌবাচ্চায় । তার মা সাঁতার কেটে আম-দুধ খেয়ে তিপ্ত হন বলে কথিত আছে।
মোগল রীতির প্রতিফলনে ভবনগুলোর নির্মাণ করা হয়। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইউরোপীয় ধারা। মোগল যুগে চুন-সুরকির ব্যবহার ছিল। এর সঙ্গে এসেছে বিম-বর্গা। ধারণা করা হয়, খেলারাম দাতার মন্দিরটি উনিশ শতকের শেষ দিকে অথবা বিশ শতকের শুরুর দিকে নির্মিত। যদিও এটি স্থাপন কালের সঠিত কোন তথ্য কোথাও পাওয়া যাই নি।
ভবনের ভারী দেয়াল ও পিলার দেখে নির্মাণকৌশল সম্পর্কে ধারণা মেলে। দোতলার চারপাশে ও চার কোণে বাংলা ঘরের আকৃতিতে এক কক্ষবিশিষ্ট আটটি ঘর। মাঝে মঠ বা মন্দির আকৃতির আরেকটা ঘর রয়েছে। খেলারাম বাড়ি ভিতরেই এই মন্দির তৈরি করেন । যার কারণে এই স্থানটি কেউ খেলারাম দাতার বাড়ি, খেলারাম দাতার মন্দির বা আন্ধারকোঠা নামে চিনে।
মন্দিরের মূল রং ছিলো ছিল লালচে। সংস্কার করার সময় মন্দিরের গায়ে সাদা রঙের প্রলেপদেওয়া হয়, বছর খানেক আগে।
খেলারাম দাতার বাড়ি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষনা দিলেও তার অবহেলিত ভাবেই পরে আছে তা বাড়িটির দেওয়াল গুলোই দেখলেই বুঝতে পারা যায়। বাড়ি ও মন্দিরটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারের তরফে একজন লোক থাকলেও তাঁকে দায়িত্ব পালনে ঠিকমতো পাওয়া যায় না এমন অভিযোগ অনেকের।
ভবনটির গায়ে ‘সংরক্ষিত পুরাকীর্তি’ সাইনবোর্ড স্থাপন করে নয় এটি সংক্ষণের জন্য দিতে হবে সঠিক ব্যবস্থা। তা হলেই বেঁচে থাকবে আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য ঐতিহ্য ।
Add new comment