Radio Veritas Asia Buick St., Fairview Park, Queszon City, Metro Manila. 1106 Philippines | + 632 9390011-15 | +6329390011-15
৫৫তম বিশ্ব সামাজিক যোগাযোগ দিবস উপলক্ষে পোপের বাণী-২০২১
“এসো দেখে যাও” যিশুর এই আমন্ত্রণ ছিলো শিষ্যদের সাথে তাঁর প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাত, যা হ’তে পারে মানুষের মধ্যে সর্বপ্রকার যোগাযোগের একটি সর্বসিদ্ধ পদ্ধতি। জীবনের সত্য বলার প্রচলিত ঐতিহাসিক ধারণা ও মনোভাব হলো, আমরা “ইতিমধ্যে জানি” আমাদের এই আত্মতুষ্টির উর্ধ্বে উঠতে হবে। আমাদের যেতে হবে, দেখতে হবে, তাদের সাথে সময় অতিবাহিত করতে হবে, তাদের গল্প শুনতে হবে, তাদের বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে- যেগুলো কোনো না কোনোভাবে আমাদের আশ্চর্যান্বিত করবে। মানুয়েল লোজানো গারিদো তাঁর সাংবাদিকদের যা বলেছিলেন, তার উদৃতি দিয়ে পোপ বলেন, “চক্ষু খোলো এবং বিস্ময় নিয়ে দেখো, তোমাদের হস্ত নির্মল ও বাস্তবতাকে স্পর্শ করুক- যেনো তুমি যা লিখেছো অন্যে সেগুলো পড়ে এবং তারাও যেনো প্রথমবারের মতো জীবনের রোমঞ্চকর অলৌকিক বিষয় জানতে পারেন।” পোপ ফ্রান্সিস বলেন, তাঁর এই আমন্ত্রণ বার্তার আলোকে সকলকে বলতে চাই, “এসো এবং দেখো” যা হ’তে পারে সর্বপ্রকার যোগাযোগের জন্য অনুপ্রেরণা; কারণ- প্রকাশনা, ইন্টারনেট, চার্চের দৈনন্দিন শিক্ষা, রাজনীতি যেগুলো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শুদ্ধ ও সত্য হওয়ার জন্য সংগ্রাম করছে। “এসো এবং দেখো’ হলো সব সময়ের জন্য মন্ডলির একটা বিশ্বাসের পথ, ঠিক সেই রকম যখন প্রথম জর্ডান নদী এবং গালিল সাগরের তীরে প্রথম মুখোমুখি যোগাযোগের ঘটনা ঘটেছিলো।
গলি গলিতে সোচ্চার হওয়া : এবার দেখা যাক বার্তা সম্পাদনার প্রধান শিরোনাম। প্রচলিত একটি ধারণা হলো, খবরের কাগজ, রেডিও, টেলিভিশনে অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন তুলে ধরার ঝুঁকির কারণে মানসই প্রতিবেদনের পরিবর্তে গুঢ় উদ্দেশ্যসম্পন্ন ও ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদন উঠে আসছে। এই প্রবণতা তৃণমূল পর্যায়ে জীবনের আসল বাস্তবতা, সত্যতা ও ইতিবাচক সামাজিকতা প্রকাশ করে না। প্রকাশনা সংস্থার এই সংকট, যা বার্তাকক্ষে, ব্যক্তির দ্বারা অথবা প্রতিষ্ঠানের অক্ষর বিন্যাস কক্ষে চিত্রায়িত হচ্ছে- তা অলিতে গলিতে থাকা মানুষের দৈনন্দিক জীবনযাত্রা, গল্পের অনুসন্ধান নয় এবং তা বাস্তবতার প্রাথমিক চিত্রও নয়। সুতরাং আমরা যদি প্রযুক্তিগত এতো উৎকর্ষতা ও সক্ষমতার পরেও আসল কাহিনীর প্রতি আমাদের নজর উন্মুক্ত না করি, তাহলে শুধু মাত্র দর্শকই হয়ে থাকবো। প্রযুক্তি আর যন্ত্রের উন্নতমান তখনই মূল্যবান হয়ে উঠে, যখন তা আমাদের আকৃষ্ট ক’রে বেরিয়ে এসে, যা আমরা জানি না বা অন্যত্র প্রকাশিত হয়নি- তার মুখোমুখি হই। নতুবা অন্যভাবে তা সম্ভব নয়।
বার্তার গল্প হিসেবে মঙ্গলসমাচার : জর্ডান নদীতে যিশুর দিক্ষাস্নানের পরে, তাঁর প্রতি সন্দিহান শিষ্যদের তিনি প্রথম যা বললেন, তা হলো, “এসো দেখে যাও,” তাই তারা গেলেন। তারা গিয়ে দেখলেন তিনি কোথায় থাকেন; এবং তারা সেই দিনের বাকি সময়টা তাঁর সঙ্গেই কাটালেন (যোহন ১:৩৯)।” যিশু তাদের আমন্ত্রণ জানালেন- যেনো তাঁর সঙ্গে একটা সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রায় অর্ধ শতাব্দি পরে যোহন যখন মঙ্গলসমাচার লিখেন এবং তখন তার সু-সংবাদ লেখনী প্রমাণ করতে সাহায্য করে যে, তিনি স্ব-শরীরে উপস্থিত থেকে তা দেখেছেন, যা তার জীবনকেও প্রবলভাবে প্রভাবিত করেছিলো। এটা আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যখন তিনি বলেন, “তখন প্রায় বিকেল চারটে।” যোহন আমাদের বলেন যে, পরেরদিন ফিলিপ নাথানায়েলকে বললেন যে, তিনি মশীহের দেখা পেয়েছেন। কিন্তু নাথানায়েল সন্দিহান হয়ে বললেন, “নাজারেথ ! সেখান থেকে ভালো কিছু কখনো কি আসতে পারে ?” ফিলিপ কিন্তু যুক্তি-তর্ক দিয়ে জয়ী না হওয়ার চেয়ে শুধু তাকে বললেন, “এসো দেখে যাও।” নাথানায়েল গেলেন এবং দেখলেন এবং সেই মূহুর্ত থেকে তার জীবনেও পরিবর্তন আসলো। এটাই হলো খ্রিস্টীয় বিশ্বাসের সূচনা, এটাই হলো প্রকৃত যোগাযোগ, প্রত্যক্ষ জ্ঞান- যার জন্ম হয় বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে- কোনো শোনা কথা থেকে নয়। সামারীয় নারীর কাহিনীতেও মশীহ সম্পর্কে এইভাবে সাক্ষ্য দেওয়া হয়েছিলো, “এখন আমরা যে বিশ্বাস করি, তা যে আর তোমার কথা শুনেই, তা নয়। আমরা তো নিজেরাই তাঁর বাণী শুনেছি, আর এখন আমরা জানি যে, তিনি সত্যিই জগতের ত্রাণকর্তা (যোহন ৪:৪২)।” তার আগে মেয়েটি মশীহের সাক্ষাৎ পাওয়ার পর শহরবাসীকে বললেন, “এসো তোমরা, দেখে যাও একজনকে, জীবনে আমি যা-কিছু করেছি, তিনি তা সবই আমাকে ব’লে দিয়েছেন। তাহলে তিনি কি সেই খ্রিস্ট নন (যোহন ৪:২৯)।” পোপ বলেন, “এসো দেখে যাও” হলো বাস্তবকে জানার একটি সহজ উপায়, আর এই সাক্ষাবাণীগুলো হলো তার বাস্তব প্রমাণ। কারণ, জানতে হলে আমাদের মুখোমুখি হ’তে হয়- সামনা সামনি শুনতে হয়- যেনো তার সাক্ষবাণীর মধ্যে পৌঁছুতে পারি।”
সাংবাদিকদের সাহসীকতার জন্য ধন্যবাদ : সাংবাদিকতা হলো যৌক্তিক বাস্তবতা- এবং একজন তার মনোবল বলে এমন সব স্থানে ভ্রমন করেন, যেখানে অন্য কেউ যাওয়ার চিন্তাও করেন না। সাংবাদিকগণ দেখা সাক্ষাৎ, ঔৎসুকতা, খোলাখুলি মন ও তাগিদের কারণে যাওয়ার জন্য তৈরি থাকেন। সাংবাদিক, ছবি গ্রাহক, সম্পাদক ও পরিচালকদের পেশাদারি মনোভাব ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজের যে সাহসীকতা- তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। তাদের কঠোর পরিশ্রমের কারণে আমরা বিশ্বের অনেকাংশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উপর অন্যায্যতা ও তাদের পরিবেশ, যুদ্ধ-সংঘাত সম্পর্কে জানতে পারছি- নতুবা এই জানা সম্ভব হতো না। তাদের এই পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ। তাদের এই পরিশ্রমটা শুধু খবর পরিবেশনা নয়, কিন্তু পরিশ্রম ও ঝুঁকি ছাড়া সমাজ, বৃহদাকারে গণতন্ত্রের কন্ঠও নিরব হয়ে যেতো। এমনকি আমাদের গোটা মানব পরিবারের সদ্গুণাবলীও লুপ্ত থেকে যেতো। আমাদের আজকের বিশ্বের অবস্থা, বিশেষ করে এই মহামারি গণমাধ্যমকে স্বাগত জানাচ্ছে, “এসো দেখে যাও” বলে। অন্যথায় আজকের এই মহামারি ও বিরাজমান অন্যান্য সংকটগুলো শুধু মাত্র বিশ্বের উন্নত জাতির নিজস্ব আলোক চিত্রের মধ্যদিয়ে জানতে হতো। উদাহরণসরূপ বলা যায় এবং প্রশ্নটি হলো মহামারির ভ্যাকসিন বিষয়ক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সহায়তা থেকে বঞ্চিত থাকার বিষয়টি। আমাদের আর কে-ই বা জানাতেন বিশ্বের দরিদ্র পীড়িত অঞ্চলগুলোর হতভাগাদের চিকিৎসার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকার পালার কথা। বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার নীতি নিশ্চিত করার অঙ্গীকার থাকলেও আসল বাস্তবতা হলো- সাম্রাজ্যবাদ এবং অর্থনৈতিক অসমতার কারণে কোভিড- ১৯ নির্মূল ভ্যাকসিন সরবরাহে দরিদ্র জনগোষ্ঠী রেখার প্রান্ত সীমায় অবস্থান করছেন। এমনকি এই সম্ভাবনাময় বিশ্বে শোকাহত বহু পরিবার খুব দ্রুত এবং অজানা থেকে, সাহায্য সংস্থার কাছে লজ্জিত হওয়ার অপেক্ষা না করে দরিদ্র সীমায় নেমে যাচ্ছেন- যেগুলো হয়তোবা খবরের শিরোনামে আসতো না।
ইন্টারনেট সংস্কৃতির সুবিধা ও গোপন বিপদসমূহ : আজকের ইন্টারনেট জগতের বহুমুখিতার কারণে গণমাধ্যমের উপস্থাপনায় বিশ্বজুড়ে বহুরকমের দৃষ্টিকোন থেকে চিত্র-প্রতিচ্ছবি, সাক্ষ্যদানসহ নানা বিষয়ের কারণে, সংবাদ পরিবেশনা ও সহযোগীতা বৃদ্ধিলাভ করেছে। আজকের ডিজিটাল প্রযুক্তির কারণে সময় মতো এবং প্রত্যক্ষসুত্রে প্রাপ্ত পর্যায়ের তথ্য প্রবাহ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আমরা চিন্তা করতে পারি- জরুরি কোনো অবস্থাকালে প্রত্যক্ষসুত্রে প্রাপ্ত সংবাদ বা সরকারি কোনো প্রজ্ঞাপন ইন্টারনেটের মাধ্যমে কতো সহজে প্রচার করা যায়। এটা আসলেই একটা শক্তিশালী প্রযুক্তি , যেটা অবশ্যই ব্যবহারকারি এবং ভোক্তাকে দায়িত্বের সাথে ব্যবহারের দাবি রাখে। প্রাচীন পদ্ধতিতে অনেক কিছুই এড়িয়ে যাওয়ার সুয়োগ থাকে কিন্তু আজকের এই শক্তিশালী মাধ্যমের কল্যাণে সমাজ অনেক ঘটনার গুরুত্ব অংশ ও ইতিবাচক সংবাদের প্রত্যক্ষ সাক্ষী হতে পারে। ইন্টারনেটের বদৌলতে আমাদের সামনে যা ঘটে তা অন্যের সঙ্গে সহভাগিতা করতে পারি। অন্যদিকে এবং একই সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার ঝুকি ও আশংকাও থেকে যায়। আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি যে, মাঝে মধ্যে উদ্দেশ্য প্রণোদিত বা হীনমনতা নিয়ে সংবাদ এবং চিত্র-প্রতিচ্ছবি বদলে দেওয়া হয়। এটা ইন্টারনেটকে খাটো ক’রে না দেখে বস্তুনিষ্ঠভাবে বিষয়বস্তু প্রচার এবং গ্রহণে সত্যতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। আমরা যে যোগাযোগের ক্ষেত্রসমূহ তৈরি করি, যেসব তথ্য প্রচার করি, সেখানে জাল তথ্য নিয়ন্ত্রণ করার প্রচেষ্টায় দায়িত্বশীল থাকতে হবে। আমাদের সবাইকে, দেখা এবং সহভাগিতার ক্ষেত্রে সত্যের সাক্ষ বহন করতে হবে।
প্রত্যক্ষসুত্রে দেখার বিকল্প কিছু নেই : যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তির নিজ চোখে কিছু দেখার শতভাগ কোনো বিকল্প নেই। প্রত্যক্ষসুত্রে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা থেকেই মাত্র আমরা শিখতে পারি। আমরা শুধু মাত্র বাক্য দিয়ে নয়- বরং সেই সাথে আমাদের চোখের ইশারা, কন্ঠস্বর এবং আকার-ইংগীতের মধ্যদিয়েও যোগাযোগ স্থাপন করি। যিশুর সঙ্গে যাদের সাক্ষাৎ হতো, তারা আকৃষ্ট হতেন তাঁর সত্য প্রচারের কারণে। অন্যের দিকে তাঁর অবলোকন, অন্যের সঙ্গে তাঁর ভিন্ন ভিন্ন আচরণ, এমনকি তাঁর নিরবতার মধ্যেও শিক্ষার অবিচ্ছেদ্যরূপ ছিলো। শিষ্যগণ শুধু যিশুর বাণীই শুনতেন না- দেখতেন তিনি কিভাবে বলেন এবং মানব দেহ ধারণকারী পুত্রের মুখে উচ্চারিত বাণীর মধ্যে কিভাবে অদৃশ্য পিতাকে শুনতে পেতেন এবং স্পর্শ করতেন। যোহনের ১ম ধর্মপত্রে যেমনটি বলা হয়েছে, “যা আদি থেকেই ছিল, আমরা যা শুনেছি, নিজেদের চোখেই যা দেখেছি, দু’চোখ ভরেই দেখেছি, আমাদের হাত যা স্পর্শ করেছে, সেই জীবনসরূপ স্বয়ং বাণীর কথাই এখন বলছি। সেই জীবন তো সত্যিই প্রকাশিত হয়েছে। আমরা তা দেখেছি আর সে বিষয়ে সাক্ষিও দিচ্ছি। যে শাশ্বত জীবন পরম পিতার কাছেই ছিল আর আমাদের সামনে যা প্রকাশিত হয়েছে, সেই জীবনের কথাই এখন তোমাদের জানাচ্ছি। আমরা নিজেরা যা দেখেছি আর যা শুনেছি, তা তোমাদের জানাচ্ছি, যাতে আমাদের সঙ্গে তোমরাও সেই মিলন বন্ধনে মিলিত হতে পার, যে মিলন বন্ধনে পরম পিতার সঙ্গে এবং তাঁর পুত্র যিশুখ্রিস্টের সঙ্গে আমরা নিজেরাই মিলিত হয়ে আছি (১:১-৩)।” বাণী তখনই কার্যকর হয়ে উঠে যদি তা “দেখে” অভিজ্ঞতা ও সংলাপের সঙ্গে যুক্ত করে তোলে। এই কারণেই “এসো দেখে যাও” এই আমন্ত্রণ বয়ে নিয়ে চলা অপরিহার্য।
আমরা চিন্তা করে দেখি- আমাদের চর্তুদিকে সারশূন্য কথার কতো চমৎকারিত্ব- যেমন জনজীবনের সর্বত্র, তেমনি ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে এবং রাজনীতিতেও। “এটা অথবা সেটা,” এইসব কথার মারপ্যাচ শুধু বৃথার সঙ্গে অশেষ কারবার ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ হিসেবে বলা যায় যে, গমের দু’টি দানার খোসা মাপ যন্ত্রের পাল্লার মধ্যে লুকিয়ে থাকা, যা তুমি আগেই দিনভর খুঁজছো, আর যখন পেলে, তখন দেখলে তোমার খোঁজা-খুঁজি সবই বৃথা। বাইবেলের মঙ্গলবার্তা গোটা বিশ্ব জুড়েই বিস্তারলাভ করেছে। ফলসরূপ- ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে, হৃদয় থেকে হৃদয়ে, খোলাখুলিভাবে নারী এবং পুরুষ, এই “এসো এবং দেখে যাও” আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন, তারাই তাদের দৃষ্টি-ভঙ্গী, কথা-বার্তা ও আকার-ইংগীত দিয়ে মানবতার জন্য খ্রিস্টের সাক্ষ বহন করছেন। প্রতিটি যন্ত্রেরই তার নিজের মূল্য রয়েছে- তবে এটা ব্যবহারকারির বিশ্বাস, আশা এবং স্বেচ্ছাদান, যার মধ্যদিয়ে তিনি তার সমসাময়িকদের উৎসাহিত করে থাকেন। সাধু আগষ্টিন বলেছেন, “আমাদের হাতে রয়েছে গ্রন্থ, আর চোখের সামনে ঘটনা” আর সেই গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে প্রাবক্তিক বাণী পূর্ণ করার অঙ্গীকার। সুতরাং মঙ্গলসমাচার আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বাস্তব হয়ে উঠে- যখন আমরা মানুষের সাক্ষদান গ্রহণ করি, যাদের জীবন যিশুর সাথে মুখোমুখি হওয়ার দরুণ রূপান্তরিত হয়ে উঠেছে। গত দুই হাজার বছর ধরে যিশুর সম্মুখ মুখোমুখি হওয়ার এই উন্মুক্ত শিকল বেড়ি খ্রিস্টীয় অগ্রযাত্রায় যোগাযোগ স্থাপন করে চলেছে। তারপরও বলতে হয়, মানুষ যেখানে যে অবস্থাতেই থাকুক না কেনো, তাদের মুখোমুখি হয়ে যোগাযোগ রক্ষা করার আমন্ত্রণ আমাদের জন্য থাকবেই।
গণমাধ্যম কর্মীদের প্রার্থনা: হে প্রভু, আমাদের শিক্ষা দাও নিজের উর্ধ্বে উঠতে এবং সত্যের অন্বেষণে নিজেকে নিয়োজিত করতে। প্রত্যক্ষ করার জন্য বাহির হ’তে শিক্ষা দাও, শুনতে শিক্ষা দাও। আমরা যেনো পক্ষপাতদুষ্টে প্রীত না হই বা অনর্থ সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করি। আমাদের যেতে শিক্ষা দাও- যেখানে কেউ যেতে ইচ্ছুক নয়। আমরা যেনো সময় নিয়ে বুঝতে পারি এবং প্রয়োজনের নিমিত্তে মনোযোগ দিতে পারি। যেনো আতিশয্যায় বিভ্রান্ত না হই। যেনো ছলনা দৃষ্টির বদলে সত্যকে চিহ্নিত করতে পারি। আমাদের অনুগ্রহ দান করো, যেনো বিশ্বে তোমার অবস্থান নির্ণয় করতে পারি এবং যেনো বিশ্বে যা দেখি তা সততার সাথে অন্যকে জানাতে পারি। - ফাদার সুনীল রোজারিও
Add new comment